সালটা ছিল ১৯৮২, দিনটি ছিল ২১ জুন। আজকের এই দিনটি সারা বিশ্বে পালিত হয় বিশ্ব সঙ্গীত দিবস হিসেবে। বিশ্ব সঙ্গীত দিবসে সংবাদ প্রতিখন শ্রদ্ধা জানায় সেই সকল অমর শিল্পীদের, যাঁদের সংগীতের মুর্চ্ছনায় উদ্বেলিত সারা বিশ্ব। এইরকম কয়েকজন বিশ্বসেরা সংগীতজ্ঞদের জীবনের কিছু বিশেষ দিক্ক আলোকপাত করলেন সংবাদ প্রতিখনের প্রতিনিধি কিশলয় মুখোপাধ্যায়।
মিউজিক ১
সময়কাল ১৯৯৭ মার্চ মাস। তাজমহলে এক মনে পিয়ানোয় ঝড় বইয়ে দিচ্ছে তাঁর আঙুল। ঘাড় পর্যন্ত নেমে আসা চুল, তাঁর মিউজিক মানুষকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে। গ্রিক আমেরিকান বিখ্যাত পিয়ানোবিদ ইয়ানি। কি বোর্ডের সম্রাট ইয়ানি বলেছিলেন স্বরলিপির মধ্যে সঙ্গীত থাকে না, সঙ্গীত থাকে মানুষের হৃদয়ে। আচ্ছা একজন মানুষের স্বপ্ন কি পাল্টে দিতে পারে গোটা দুনিয়াটা? হ্যাঁ, ইয়ানি বলছেন ‘এ ম্যানস ড্রিম ইস সো পাওয়ারফুল দ্যাট ইট ক্যান চেঞ্জ দা ওয়ার্ল্ড।’ ইয়ানি হলেন কতিপয় শিল্পী যাঁর তাজমহলের মধ্যে অনুষ্ঠান করার সৌভাগ্য হয়েছিল। অনুষ্ঠানের নাম ছিল ‘ফ্রিডম কনসার্ট’।
মিউজিক ২
মাত্র ১১ বছরের এক বালকের সঙ্গীত প্রতিভা দেখে তৎকালীন এক পত্রিকায় ছাপা হল সেই বালকের অসাধারণ পিয়ানো কম্পোজিসান। এই বালক হলেন বিস্ময় বালক বিটোভেন। তবে ছোট বেলায় যে ভাবে নির্মম ভাবে পিয়ানো শেখানো হত সেটা চলতে থাকলে আমরা আর এই বিটোভেন কে পেতাম না। মায়ের সঙ্গে ১৭৮১ সাল নাগাদ নেদারল্যান্ড আসেন আর গুরু হিসেবে পান ক্রিস্টিয়ান নিফেকে। তিনি তাঁকে পুত্রের মতো স্নেহ করতেন। এরপর চলতে থাকে পিয়ানো বাজানো। ৩৭-৩৮ বছর বয়সে প্রায় পুরো শ্রবণশক্তি নষ্ট হয়ে যায়। তবে উল্লেখযোগ্য দিক হল বিটোভেনের বিখ্যাত সুর গুলোর বেশিরভাগই শ্রবণ শক্তি বিনষ্ট হবার পর তৈরি করা। ওই যে ইয়ানি বলেছেন সঙ্গীত থাকে মানুষের হৃদয়। মুক্তি দেয় ফ্রিডম।
মিউজিক ৩
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিকায় একটি সিনেমার দৃশ্য। পোলিশ রেডিওর ইহুদি পিয়ানোবাদক ধরা পড়লেন এক জার্মান অফিসারের কাছে। সেই ঘরে একটি পিয়ানো ছিল। সেটি বাজিয়ে শোনালেন। শুনে মুগ্ধ সেই অফিসার এবং সঙ্গীত প্রিয় অফিসার তাঁকে লুকিয়ে থাকতে সাহায্য করলেন। সোভিয়েত সেনা শহরের দোরগোড়ায়। সেই জার্মান অফিসারের ওই স্থান ত্যাগ করার পালা। যাবার আগে বললেন যুদ্ধ শেষ হবার পর কী করবে। ইহুদি পিয়ানোবাদক বলেছিলেন আবার পিয়ানো বাজাবো পোলিশ রেডিওতে। নাম জানতে বললেন szpilman। অফিসার বললেন একজন পিয়ানিস্টের কাছে একদম সার্থক নাম। সিনেমাটি হল দা পিয়ানিস্ট।
মিউজিক মানে মুক্তি। সঙ্গীত মন খারাপ থেকে মন ভালো করে। গান আর বাজনা সর্বকালের প্রত্যেকটি দেশের প্রত্যকের মুক্তধারা আর আমাদের দেশ ভারতবর্ষ সেই কোন কালেই বলেছে: ‘জপকোটিগুনং ধ্যানং ধ্যান কোটি গুনং লয়ঃ/ লয় কোটি গুনং গানং গানাৎ পরতরং নহি।’