রাত পোহালেই মহালয়া। আজও মহালয়ার ভোরে আকাশবাণীর কল্যাণে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের উদাত্ত কন্ঠের শ্রী শ্রী চণ্ডী পাঠ আমাদের মনে করিয়ে দেয় মা আসছেন। আর এই সময় থেকেই শুরু হয়ে যায় পাড়ায় পাড়ায় পুজোর শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। বর্তমানে সবেকিয়ানার সঙ্গে থিমের মেলবন্ধন ঘটিয়ে মাতৃ আরাধনা ব্রতী হন অনেক সংগঠন। এমনই দেখতে পাওয়া যাবে এই বছর বৈদ্যবাটি বেণী ব্যানার্জী লেনের দুর্গাপুজোয়।
আর এই নিয়েই আলোকপাত করলেন কিশলয় মুখোপাধ্যায়
সালুমারাদা থিম্মাক্কা, যিনি নিঃসন্তান হয়েও প্রায় ৮০০০ গাছের মা। কর্নাটকে হুলিকাল থেকে কুদ্দুরের মধ্যে পথে ৩৮৫টি অশ্বথ জাতীয় গাছ লাগিয়েছেন। নিরজা ভোনত, প্যান এস ফ্লাইট ৭৩ বিমানের বিমান বালিকা, ছিনতাই হওয়া এই বিমানের ৩৬০ জনের প্রাণ বাঁচিয়ে ছিলেন নিজের জীবন দিয়ে। রকেট নারী রিতু করিধল, ভগিনী নিবেদিতা, মাদার টেরিজা। সমাজে এদের অবদান অনস্বীকার্য। এবার এদের নিয়েই থিম বৈদ্যবাটি বেণী ব্যানার্জী লেনের দুর্গাপুজোয়। ৬২ বছরে পদার্পন করা এই পুজোর থিম ‘নারীশক্তি’ যার ক্যাচ লাইন হল “আমিই সেই নারী”।
তাঁদের এই থিম নিয়ে কথা হচ্ছিল এই থিমের প্রধান রূপকার এই পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য শ্যামল সাঁধুখার সঙ্গে। কিছুটা তৈরি হওয়া পুজো প্যাণ্ডেলের পাশে বসে শ্যামল বাবু বললেন, সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মহিলারা সমাজের জন্য যে কাজ করেছেন বা করছেন তাঁদের কাজের প্রতি সম্মান জানতে তাঁদের ভাবনায় ভাবিত হয়ে তাঁদের এই থিম। মন্ডপে দেখা গেল অনেক স্লেট, তাতে লেখা আছে সখি, মা, বোন, তনয়া।
এ প্রসঙ্গে শ্যামল বাবু বললেন আমরা বিভিন্ন নামে ডাকি একজন নারীকে। সেই যে বিভিন্ন রূপ সেটা তুলে ধরা হচ্ছে। এই পুজোর প্রতিমা প্রথম থেকেই সাবেকি। সেখানে কোন পরিবর্তন আনা হয়না। দুর্গা যেমন অসুর বধ করে এই ধরণী তথা ব্রহ্মাণ্ড রক্ষা করছেন। সেরকম দেবী দুর্গার মতো সমাজে অনেক দুর্গা আছেন আমাদের ঘরে ঘরে। তাঁদের কথাই তুলে ধরা হয়েছে।
বিশেষ করে ছোটরা এখানে এলে এই থিমের কাজগুলো দেখলে অনেক কিছু জানতে পারবে। ছোটরা ভবিষ্যতে সমাজের উপকার করতে তথা দেশ গড়তে অনুপ্রেরণা পাবে ‘নারীশক্তি’ থিম থেকে।