সুগত মুখোপাধ্যায় : বিশ্বকাপ ক্রিকেটের প্রথম ম্যাচেই লোকেশ রাহুল-বিরাট কোহলি ভেন্টিলেশন থেকে দলকে টেনে তুলে জয় এনে দিলেন। মাত্র ২০০ রান তাড়া করতে নেমে ২ রানের মধ্যে দলনায়ক রোহিত শর্মা সহ প্রথম তিন ব্যাটসম্যানের উইকেট হারিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে দাঁড়িয়েছিল টিম ইন্ডিয়ার । সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৫২ বল বাকি থাকতে ৬ উইকেটে জয় দিয়ে বিশ্বকাপে যাত্রা শুরু কোহলিদের। লোকেশ রাহুল ১১৫ বলে ৯৭ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জয় এনে দিলেন। কোহলি ১১৬ বলে ৮৫ রানের দুরন্ত একটি ইনিংস খেলে দলের জয়ের ভিত গড়লেন। চতুর্থ উইকেটের জুটিতে কোহলি ও রাহুল ১৬৫ রান যোগ না করলে হয়তো চেন্নাইয়ের মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়ত ভারত।
টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল অজিরা। কিন্তু ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই বুমরাহ ওপেনার মিচেল মার্শকে ফিরিয়ে প্রথম আঘাতটি করেন। এরপর অপর ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভ স্মিথ দ্বিতীয় উইকেটে ৬৯ রান যোগ করে অজিদের চাপের মুখ থেকে টেনে তুলতে চেষ্টা করেন। ওয়ার্নারকে ৪১ রানে কুলদীপ যাদব প্যাভিলিয়নে ফেরাতেই আবার চাপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। আর ম্যাচের মোড় ঘুরে যায় রবিন্দ্র জাদেজার একটা ডেলিভারি। স্মিথকে (৪৬) রানে আটকে দিতেই অজিদের ভাগ্যলিখন হয়ে গেছিল।
শুভমন গিলকে বাদ দিয়েই তিন স্পিনারে খেলার সিদ্ধান্তটা যে সঠিক তা প্রমান করে দিলেন জাদেজা (২৮/৩), কুলদীপ যাদব (৪২/২) ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন (৩৪/১) উইকেট নিয়ে অজিদের ব্যাটিং মেরুদন্ড ভেঙে দেন। এছাড়া যশপ্রীত বুমরা (৩৫ রানে ২ উইকেট) এবং মহম্মদ সিরাজ ও হার্দিক পান্ডিয়া একটি করে উইকেট তুলে অস্ট্রেলিয়াকে ৪৯.৩ ওভারে ১৯৯ রানে আটকে রাখেন। কিন্তু ঐ রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ১২ টা বলেই যে রোহিতদের চোখেমুখে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দেবেন স্টার্ক ,হ্যাজেলউডরা তা কল্পনাতেও কেউ ভাবতে পারেননি।
তাই ভারতের ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই চিপক স্টেডিয়াম জুড়ে শুধু নয়,গোট দেশ জুড়ে নিঃস্তব্দতা নেমে এসেছিল। বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুল চতুর্থ উইকেটের জুটিতে রুখে না দাঁড়ালে হয়তো অন্ধকার নামতো দেশজুড়ে। ৮৩ বিশ্বকাপে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে অনেকটা এইরকম পরিস্থিতি থেকে দলকে টেনে তুলে জয় এনে দিয়েছিলেন কপিলদেব। আর রবিবার ছুটির মেজাজটা আবার ফিরিয়ে দিলেন কোহলি-রাহুল। কোহলি ছটি চারের সাহায্যে ৮৫ রান করে ফিরলেও তখন জয়ের ঠিকানা লেখা হয়ে গিয়েছিল। তাই হার্দিক পান্ডিয়াকে নিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছান রাহুল। তিনি আটটি চার ও দুটি ছয়ের দৌলতে অপরাজিত ৯৭ রান করে ম্যাচের সেরা পুরস্কারটি পেলেন।