ভাঙলেও মচকালেন না রোহিতরা

সুগত মুখোপাধ্যায়: রাজকোর্টে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের সিরিজের শেষ ম্যাচে ৬৬ রানে  হারল রোহিতের টিম ইন্ডিয়া। ম্যাচ হারলেও মচকাতে রাজি নন রোহিত। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম দু-ম্যাচে এক কম্বিনেশন, শেষ ম্যাচে আলাদা। শেষ ম্যাচে বিরাট, রোহিতে মতো দুই তারকা ফিরেছিলেন। বিশ্বকাপের আগে এই ম্যাচ ধরলে ভারতের কাছে তিনটি ম্যাচ ছিল কম্বিনেশন দেখে নেওয়ার। এই সিরিজে যে যেমনই পারফর্ম করুক, বিশ্বকাপের ১৫ জনের দল নিয়ে পরিষ্কার রোহিতরা। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচে হার নিয়েও চিন্তিত নন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। পরিষ্কার করে দিয়েছেন, এক ম্যাচের ফল নয়, বিশ্বকাপে নজর।

অধিনায়ক রোহিত শর্মা গত দু-ম্যাচে বিশ্রামে ছিলেন। এ দিন ফিরেই অনবদ্য ব্যাটিং। অল্পের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া। রোহিত বলেন, ‘শেষ সাত-আটটা একদিনের ম্যাচে আমরা ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে খেলেছি। আলাদা পরিস্থিতিতে নিজেদের চ্যালেঞ্জ করেছি এবং সেটা খুব ভালো ভাবে গ্রহণও করেছি। দুর্ভাগ্যবশত, এই ম্যাচের ফলাফল আমাদের পক্ষে যায়নি। তবে এই ফল নিয়ে আমি চিন্তিত নই। এটুকু জানি, আমরা ভালো খেলছি।’

 রাজকোর্টে এদিনও ৮১ রান করেছেন রোহিত। পাঁচটি বাউন্ডারি এবং ছ’টি ওভার বাউন্ডারি ছিল তাঁর ইনিংসে। নিজের ব্যাটিং নিয়ে রোহিত বলছেন, ‘নিজের পারফরম্যান্সে খুশি। নিঃসন্দেহে আমার লক্ষ্য আরও বেশি সময় উইকেটে থাকা এবং বড় রান করা। তবে যতক্ষণ ভালো ব্যাট করছি, স্কোর নিয়ে চিন্তিত নই।’

তবে অক্ষর প্যাটেলের ফিটনেস নিয়ে ধোঁয়াশা রেখেই দিলেন রোহিত। তবে আত্মবিশ্বাসী, বিশ্বকাপে খেলবেন অক্ষর এবং ভালো পারফর্মও করবেন । রোহিত বলছেন, ‘আমরা যে ১৫ জনকে বেছে নিয়েছি, তাঁদের সম্পর্কে পরিষ্কার ধারনা রয়েছে। নিজেদের পরিকল্পনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল।’ ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হোয়াইট হল না টিম ইন্ডিয়ার ।ভারতের বিরুদ্ধে শেষ ওয়ান ডে ম্যাচে ৬৬ রানে জয় ছিনিয়ে নিল অজিরা। প্রথম দুটো ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ জিতে নিয়েছিল ভারতীয় দল। শেষ ম্যাচে ভারতীয় একাদশে ছিলেন না ফর্মে থাকা শুভমন গিল,হার্দিক পাণ্ডিয়া ও মহম্মদ শামি। ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৩৫২ রান বোর্ডে তুলেছিল অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২৮৬ রানেই শেষ হয়ে যায় ভারতের ইনিংস।

ওপেনিং জুটিতে কিছুটা পরীক্ষা চালানো হয়েছিল গিল না থাকায়। ওয়াশিংটন সুন্দর যদিও ১৮ রান করেন। তিনি ম্যাক্সওয়েলের শিকার হন। এরপর রোহিত ও বিরাট মিলে দলের স্কোরবোর্ড টেনে নিয়ে যেতে থাকেন। দুজনেই অর্ধশতরানের ইনিংস খেলেন। বিশ্বকাপের আগে যা কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টকে। রোহিত ৮১ রান করেন। বিরাট ৫৬ রান করে আউট হন। ৪৮ রান করেন শ্রেয়স আইয়ার। ২৬ রান লোকেশ রাহুলের। নীচের দিকে ৩৫ রানের ইনিংস খেলেন রবীন্দ্র জাডেজা। ব্যাট হাতে সফল না হলেও বল হাতে ৪ উইকেট তুলে নেন ম্যাক্সওয়েল। ম্যাচের সেরাও হন তিনি। সিরিজ সেরা হন শুভমন গিল।

এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। ওপেনিংয়ে নেমেছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শ। ওপেনিং জুটিতে ৭৮ রান বোর্ডে তুলে নেন তাঁরা। ৫৬ রানের ইনিংস খেলে আউট হন বাঁহাতি অজি ওপেনার ওয়ার্নার। এরপর স্মিথের সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন মার্শ। এদিন ৮৪ বলে ৯৬ রানের ইনিংস খেলেন মার্শ। নিজের ইনিংসে ১৩টি বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি হাঁকান মার্শ।

স্মিথ ব্যক্তিগত ৭৪ রানের মাথায় সিরাজের বলে লিগেবিফোর হয়ে ফিরতে হয়। তাঁর ইনিংসে আটটি বাউন্ডারি ও একটি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। ৭২ রানের ইনিংস খেলে লাবুশেন আউট হন বুমরার বলে। নিজের ইনিংসে তিনি নটি বাউন্ডারি হাঁকান। ২২ বলে ১৯ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন প্যাট কামিন্স। একটি বাউন্ডারি হাঁকান অজি অধিনায়ক। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩৫২ রান বোর্ডে তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া। এবং বিশ্বকাপের আগে তিন ম্যাচের সিরিজ ১-২ ব্যবধানে হেরে লড়াইয়ে ফেরার ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন কমিন্স, ওয়ার্নাররা।

 

 

%d bloggers like this: