আজ কৌশিকী অমাবস্যা, কেন এই অমাবস্যা, বা এই কৌশিকী অমাবস্যা কেন পালন করা হয়, এর পেছনে পৌরাণিক কারণ কি, সেই সম্পর্কে আলোকপাত করলেন অনিমেষ
কথিত রয়েছে, অসুর শুম্ভ ও নিশুম্ভ একবার কঠিন সাধনায় ব্রহ্মাকে তুষ্ঠ করে। এমন সময় তুষ্ট হয়ে ব্রহ্মা তাদের বর দেন যে, তাদের কোনও পুরুষ হত্যা করতে পারবে না। অতাদের মৃত্যু হতে পারে সেই নারীর হাতে যিনি মাতৃগর্ভ থেকে জাত নন। এমন দেববাণী শুনে শুম্ভ নিশুম্ভ মহানন্দে অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে তুলল।এমন এক ঘটনার জেরে দেবভূমি ত্রস্ত হল। অসুর বিনাশের কথা যখন চিন্তা করা হচ্ছে, তখন সামনে এল পার্বতীর কথা। যিনি দক্ষ যজ্ঞস্থনে আত্মাহুতি দেওয়ার ফলে কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেন। এই কৃষ্ণবর্ণ দেবী কঠিন যজ্ঞের পর কালিকা রূপে অবতীর্ণ হলেন। তাঁর দেহের কোশিকা কালো বর্ণ হওয়ায় নাম হয় কৌশিকী। আর এই তিথিতে তিনি মহাশক্তির অধিকারীনী হয়ে কৌশিকী রূপে বধ করেন শুম্ভ ও নিশুম্ভকে।মৎস পূরাণ ও মাণ্ডেয় পূরাণে বলা হয়, অসুর দ্বয় শুম্ভ ও নিশুম্ভকে বধ করতে দেবী পার্বতী সাধনা শুরু করেন। তপস্যার পর, নিজের শ্বেতশুভ্র গায়ের রঙ পরিত্যাগ করে ,উজ্জ্বল কালো বর্ণে ভয়াল রূপ ধারণ করেন দেবী। সেই রূপে দেবী পার্বতী হয়ে ওঠেন ‘কৌশিকী’।
আর এই কৌশিকীই অমাবস্যার এক বিশেষ কালক্ষণে, অন্ধকারে বধ করেন শুম্ভ ও নিশুম্ভ নামের দুই অসুরকে। সেই কালক্ষণকে স্মরণ করেই অনুষ্ঠিত হয় কৌশিকী অমাবস্যার পূজা।শুধু হিন্দু মতে নয়, বৌদ্ধ মতেও তন্ত্র সাধনার জন্য এই দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শাস্ত্রজ্ঞরা বলেন, কৌশিকী অমাবস্যার রাতে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক শক্তিকে সাধনার মাধ্যমে তান্ত্রিকরা ধারণ করে থাকেন। যে সাধনার ফলে বলা হয়, আশাতীত ফল লাভ করেন তন্ত্রসাধকরা। তারাপীঠের মহাশ্মশানে এই তন্ত্রসাধনা হয়ে থাকে এই পূণ্য তিথিতে।