নিজস্ব সংবাদদাতা, বসিরহাট: দমদম চক্রবাকের প্রযোজনা অক্টোপাস লিমিটেড, কর্পোরেট ওয়ার্ল্ডের ফাঁদে কি ভাবে ডুবে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ তারই একটা দলিল। ১৯৯৮ সালে মোহিত চট্টোপাধ্যায়ের লেখা। এই নাটকে মোহিত চট্টোপাধ্যায় তুলে ধরতে চেয়েছিলেন উম্মুক্ত বাজার অর্থনীতির কথা। দমদম চক্রবাকের প্রযোজনায় পায়েল চক্রবর্তীর নির্দেশনায় সম্প্রতি অভিনয় হয়ে গেলো বসিরহাট রবীন্দ্র ভবনে আয়োজিত বসিরহাট নাট্য সমন্বয়ের নাট্য উৎসবে। নাটকটি দর্শকদের মন কেড়েছে। অনেক দর্শকেরই বক্তব্য এতো গুলো নাটকের মধ্যে এই নাটকটা অন্যরকম।
পরিচালকের বক্তব্য, “মুক্ত বাজার নীতির ফলে বিজ্ঞাপনের যে বাড় বাড়ন্ত তার ফলে সাধারণ মানুষ বুঝে না বুঝে সেটা নেওয়া বা পাওয়ার চেষ্টা মরিয়া ভাবে করে চলেছে। নাটকের মধ্য দিয়ে সেটাই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।” প্রসঙ্গতঃ মোহিত বাবু যখন নাটকটি লিখেছিলেন তখন কর্পোরেট ওয়ার্ল্ডের এই খেলা সবে শুরু হয়েছে। এখন সেই খেলা বেশ জাঁকিয়ে জমে বসেছে। সাধারণ ট্যালেন্ট থেকে খ্যাতনামা শিল্পী সাহিত্যিক সবাই বিজ্ঞাপন পেতে মরিয়া। যে বস্তুর বিজ্ঞাপন দিচ্ছে সেই বস্তুটি সমাজের কোনো ক্ষতি করছে কিনা সেটা দেখারও প্রয়োজন বোধ করে না অনেকেই। বিজ্ঞাপনের পিছনে ছুটেই চলেছে।
একটি অল্প বয়স্ক দম্পতি যারা বিয়ের স্বপ্ন দেখে, বেকারত্বের কারণে হতাশ। প্রতিদিন পার্কের বেঞ্চে বসে বাদাম খায় আর দিবা স্বপ্ন দেখে। এমনি একদিন পার্কে এসে দেখে এক ভদ্র লোক বসে আছেন। জানা যায় তিনি কর্পোরেট এক্সিকিউটিভ। সেই এক্সিকিউটিভ ওদের কথা শোনে এবং দম্পতির বিয়ের ব্যাবস্থা করে। অন্য কোম্পানিও এই প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে। মোহিত বাবু কর্পোরেটদের মধ্যে প্রতিযোগিতার লড়াইয়ে শেষ করেন।
কিন্তু চক্রবাক তুলে ধরে ওদের লড়াইয়ে সাধারণ মানুষও দিশেহারা, অফার যেদিকে বেশি পাচ্ছে সেদিকে দৌড়াচ্ছে। বসিরহাটের বেশ কিছু তরুণ তুর্কিদের নিয়ে এই নাটক মঞ্চস্থ করে চক্রবাক। অভিনয়ে সঞ্জয় চক্রবর্তী, জয়ন্ত দাশ, স্বপন দাস ও ফাল্গুনী দাস সহ সকলেই অনবদ্য। নির্দেশক পায়েল চক্রবর্তীর বলেন, “নাটকটি দর্শকের ভালো লেগেছে, এটা আমাদের উৎসাহ বাড়াবে।”