গল্পমালায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২ তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ লেখায় কবি, লেখক, প্রাবন্ধিক ও বাচিক শিল্পী অশেষ বন্দ্যোপাধ্যায়
খুট করে একটা শব্দ।ঘুমটা ভেঙে গেলো। বিছনায় উঠে বসতেই দেখি জানালায় আলো আঁধারিতে কে যেন দাঁড়িয়ে। ভাবলাম চোর টোর নাকি! চোখ কচলে তাকাতেই দেখি স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমার ঘরে দাঁড়িয়ে।
তাড়াতাড়ি উঠে গিয়ে বললাম – গুরুদেব আপনি? অসময়ে এখানে?
গুরুদেব কিছুক্ষণ নিরুত্তর। একটা চাপা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে উঠলেন – তোমরা বাপু বড় বেইমান।
কেন কেন ?
এই একটা দিনই তো আমাকে স্মরণ করো।অবশ্য বাইশে শ্রাবণও আমার স্মরণ সভা করা হয়। ব্যাস ওই পর্যন্তই। তারপর ? তারপর ফাঁকা।
মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলাম।
দেখ, আজকাল আমার গানের তো মাথা মুন্ডু বুঝি না। এত বাজনার আধিক্য যে গানের কথাই পরিষ্কার শোনা যায় না। আর সুর? সে তো যে যার মত কেরামতি দেখায়। এসব কী ঠিক হচ্ছে?
না একদমই না। আমার স্পষ্ট জবাব।
তবে বলো ?
গুরুদেবের মনটা খারাপ দেখলাম, আমারও।
আবার একটা দীর্ঘশ্বাস।
গুরুদেব পেছনে হাত রেখে আকাশের চাঁদের দিকে তাকালেন।
চোখ দুটো চক চক করছে।
বিষন্ন মুখ।
ক্ষমা করবেন গুরুদেব। আমি দু হাত বুকের কাছে নিয়ে বললাম।
গুরুদেব হালকা করে হাসলেন। তারপর বললেন – চললেম।
আর ঠিক তক্ষুনি আমার ঘুমটা সত্যি সত্যি ভেঙে গেলো। বিছানা থেকে নেমে জানলার কাছে গেলাম।
আকাশে চাঁদ স্থির। হালকা মেঘের লুকোচুরি খেলা চলছে। অল্প ঠান্ডা বাতাস বইছে।
দূরে আকাশ পানে চেয়ে গুরুদেব কে দেখার চেষ্টা করলাম।
আমার মনটাও বিষন্নতায় ভরে উঠলো।।