শুধুমাত্র একটি দিন নয় প্রতিটি দিন পালিত হোক সূর্য দিবস

আজ ৩ মে, আন্তর্জাতিক সূর্য দিবস। এই দিবস সম্পর্কে আলোকপাত করলেন সুফল তর্কালঙ্কার

আমাদের সৌরজগতের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সূর্য। সূর্য পৃথিবীর সবথেকে কাছের নক্ষত্র। যার ব্যাসার্ধ ৪৩২ হাজার মাইলেরও বেশী, এবং সূর্য পৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা প্রায় দশ হাজার ডিগ্রি ফারেনহাইটের থেকে অনেকটাই বেশী। আমাদের পৃথিবীর জীবকুল অর্থাৎ মনুষ্যকুল থেকে আরম্ভ করে সকল প্রকার জীবিত প্রাণী  তথা উদ্ভিদেরও প্রানশক্তি এই সূর্য। যে জ্বলন্ত গোলাকার বস্তুটির আলোয় আমরা আলোকিত হই,  সেই আলোকেই মূল করে পৃথিবীর উদ্ভিদকূল নিজেদের খাদ্য বানিয়ে বেঁচে থাকে এই ধরায়। আমাদের জীবনে তাই সূর্যের গুরুত্ব অপরিসীম।

আর কিছুটা এইজন্যই সূর্যকে দেবতারূপে জ্ঞান করে পুজো করা হয়ে থাকে পৃথিবীর নানা প্রান্তে। যে বিষয়টি আমাদের সবথেকে অবাক করে সেটি হলো আমাদের পৃথিবীর সমান প্রায় তিন লাখ ষাট হাজারেরও বেশী পৃথিবীর সমান আয়তন এই বিস্ময়কর নক্ষত্র সূর্যের। পৃথিবী থেকে যার দূরত্ব প্রায় পনেরো কোটি কিলোমিটার।

স্বভাবতই প্রশ্ন আসে কিভাবে সৃষ্টি হয়েছিলো এই বিরল ক্ষমতা সম্পন্ন নক্ষত্রটির। বিভিন্ন সৌরবিজ্ঞানীদের মতে সূর্যের বয়স চারশো ষাট কোটি বছরেরও বেশী।

সৌরজগতের প্রধান সূর্য যেটিকে কম ব্যয় সাপেক্ষ পরিবেশ বান্ধব শক্তির প্রধান উৎস হিসেবে পরিগণিত করা হয়, তাকে কেন্দ্র করে সারা বিশ্বে আজকের দিনটি(৩ মে )পালন করা হয় আন্তর্জাতিক সূর্য দিবস হিসেবে।

এই সূর্য দিবস পালন করার পেছনেও রয়েছে এক ইতিহাস। জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার কমিয়ে বেশী করে পরিবেশ বান্ধব কম খরচের এই সৌরশক্তিকে ব্যবহার করতেই এই দিবস পালন বলে ধরে নেওয়া যেতেই পারে। ১৯৭০ সালে ডেনিস হেইস নামক একজন আমেরিকান পরিবেশবিদ ও সৌর শক্তির গবেষক প্রথম সারা বিশ্বে এই অপ্রচলিত শক্তির অন্যতম আধার সূর্য দিবস পালনের প্রস্তাব রাখেন। পরবর্তী কালে ১৯৯৪ সালে আজকের দিনটি অর্থাৎ ৩ মে আন্তর্জাতিক সূর্য দিবস হিসেবে সারা বিশ্বে সমাদৃত হয়।

সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব শক্তির উৎস সূর্য দিবস পালন উপলক্ষে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এই দিনটি নানা প্রদর্শনী, আলোচনা সভা এবং সৌর সংক্রান্ত নানা প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে পালন করা হয়।

বর্তমানে পৃথিবীর মধ্যে চিন এমন একটি দেশ যারা সৌরশক্তির ব্যবহারে সারা বিশ্বে অগ্রগন্য ভূমিকা পালন করছে। এই পুনর্ণবিকরণ শক্তির প্রধান উৎস সূর্য শক্তির মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষায় তাঁদের এই প্রয়াসে আজ অনুপ্রেরণা পাচ্ছে নানা দেশ। আজ সকলে বুঝতে পারছে আমাদের এই পৃথিবীকে রক্ষা করতে এবং সুস্থ জীবন যাপনে সম্পূর্ণ পরিবেশ বান্ধব এই শক্তি ব্যবহার কতটা প্রয়োজনীয় ও যুক্তিযুক্ত।

কাজেই আজকের দিনে শুধু নয় সারা বছর ই পালন করা হোক পরিবেশ বান্ধব এই শক্তির প্রধান সৌরশক্তির ব্যবহার সম্পর্কে জনগণকে আরও সচেতন করে তোলার জন্য পালন করা হোক প্রতিটি দিন সূর্য দিবস হিসেবে।

%d