আজ ৩ মে, বিশ্ব প্রেস স্বাধীনতা দিবস। বিশ্ব প্রেস স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কে আলোকপাত করলেন
সাংবাদিক কিশলয় মুখোপাধ্যায়
আজ বিশ্ব প্রেস স্বাধীনতা দিবস বা ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে। ১৯৯৩ সালের রাষ্ট্র সংঘের সাধারণ অধিবেশনে এই দিবসটি ৩ মে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ‘ফ্রিডম’ শুনতে খুব মিষ্টি কিন্তু বাস্তবে যে নিম পাতার মতো তেঁতো তা সাংবাদিকরা হারে হারে জানে। প্রতি বছর এটি পালন করা হয় রাষ্ট্র তথা প্রভাবশালী বা ক্ষমতাশালী মানুষদের মনে করিয়ে দেওয়া যে প্রেসকে দেশ ও সমাজের উন্নতির জন্য স্বাধীন ভাবে করতে দিতে হবে। আর এই দিন স্মরণ করা হয় সেই সব সাংবাদিকদের যাঁরা খবর করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন এবং কারাগারে বন্দি আছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জ ও আন্তর্জাতিক সাংবাদিকতার সংঘঠনের (ICFJ) সমীক্ষা বলছে ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে প্রায় ৪৫৫ জন সাংবাদিক মারা গেছেন সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে। এঁদের মধ্যে কয়েজনকে টার্গেট করে মারা হয়। যেহেতু তাঁরা বস্তুনিষ্ঠ খবর করেছিল। ১২৫টি দেশের প্রায় ৭১৪ জন মহিলা সাংবাদিক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে অনলাইন ভায়লেন্সের স্বীকার হয়েছেন। ২০২২ সালে ১৮০টি দেশের এই সংবাদমাধ্যম স্বাধীনতায় ভারতের স্থান ১৫০।
এই দিবসের শুরুটা হয়েছিল আফ্রিকা থেকে।নামিবিয়াতে একটি সেমিনারে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা ও বহুমুখি সাংবাদিকতার জন্য একটি ঘোষনা করা হয়। এতে বল হয় যে অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য ও দেশ ও জাতির গণতন্ত্র বিকাশের জন্য সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা জরুরী। রাষ্ট্র সংঘ মনে করে ‘হিউমান রাইটস’ এর অনেক উন্নতি হওয়া সত্বেও মিডিয়ার স্বাধীনতা, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা আজ প্রশ্নের মুখে।সুইডেন হল বিশ্বের প্রথম দেশ যারা ১৭৬৬ সালের ফ্রিডম অফ প্রেস অ্যাক্টের মাধ্যমে স্বাধীনতা কে তাদের সংবিধানে নেওয়া হয়।
গণতন্ত্রের চারটি স্তম্ভের মধ্যে রয়েছে প্রেস। এইবছর বিশ্ব গণতন্ত্র দিবসে থিম ছিল মিডিয়ার স্বাধীনতার গুরুত্ব। এপ্রসঙ্গে রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব অ্যান্টিনিও গুটেরেস বলেছিলেন মুক্ত সা়ংবাদিকতা না থাকলে গণতন্ত্র বাঁচবেনা। মত প্রকাশের স্বাধীনতা ছাড়া স্বাধীনতা বলে কিছু হয়না। কোরনা পর্বের পর দেখা যাচ্ছে বিশ্বে গণতন্ত্র আর মিডিয়ার স্বাধীনতা দুটোই ভীষণ ভাবে বিপন্ন। গণজ্ঞাপন বা গণযোগাযোগ গণতন্ত্রকে রক্ষা করে। আর গণজ্ঞাপনের সঙ্গে সমাজের সম্পর্ক খুবই নিবিড়। এম.ভি.চার্নলি বলেছেন সংবাদ হল আজকের মোড়কে দেওয়া আগামী দিনের ইতিহাস।
আজ আমরা সংবাদপত্র তথা মিডিয়াতে যা পাই তা হল সমসাময়িক চিন্তা ভাবনা ও ঘটনার প্রতিফলন। হিকির গেজেট থেকে আজকের নিউজ পোর্টাল অর্থাৎ খবরের কাগজ থেকে টিভি আর টিভি থেকে ডিজিটাল মিডিয়ার উত্তোরণ হয়ে এখন মোবাইল সাংবাদিকতা বিকশিত হচ্ছে। কিন্তু প্রেসের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ একই রয়ে গেছে।