অভিজিৎ হাজরা, আমতা, হাওড়া: পূর্বতন আমতা থানা বর্তমানে পেঁড়ো থানার অন্তর্গত বসন্তপুর গ্ৰামের উত্তর পাড়ার ইন্দ্র পোড়েল হত্যা কান্ডের রায় ঘোষণা হল আমতা আদালতে। এই হত্যা কান্ডের অভিযুক্ত মনোজ মাটিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ, ২০,০০০(কুড়ি হাজার) টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ (এক) বছর সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ এর নির্দেশ দিল আমতা আদালতের বিচারক রোহন সিনহা। এই হত্যা কান্ডের সরকারি উকিল (এ,বি,পি)ছিলেন নন্দলাল হাজরা। অন্য উকিল ছিলেন অসীম ঘোষ।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা যায়, বসন্তপুর গ্ৰামের উত্তর পাড়ার ইন্দ্র পোড়েল এর স্ত্রী ছবি পোড়েল ওই গ্ৰামের মনসা ওরফে মনোজ মাটি-র সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এটা ইন্দ্র পোড়েল জানতে পেরে প্রতিবাদ করে। মনসা ইন্দ্রকে মেরে ফেলার ছক কষে। গত ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ মনসা মাটি ইন্দ্র পোড়েলকে মেরে ফেলার জন্য বিষ কেনে। মনসা ওই দিন ইন্দ্র পোড়েলকে ডেকে নিয়ে যায় বসন্তপুর হাই মাদ্রাসা স্কুলের পিছনে। ওখানে গিয়ে মনসা ওরফে মনোজ মাটি ইন্দ্রর অজান্তে এগরোলে বিষ মিশিয়ে ইন্দ্রকে খেতে দেয়। তা খেয়ে ইন্দ্র অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দেবান্দী গ্ৰামের এক কোয়াক ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। তারপর আমতা গ্ৰামীণ হাসপাতালে, ওখান থেকে উলুবেড়িয়া হাসপাতাল নিয়ে যায়। শেষমেষ ওখান থেকে বড়দা গ্ৰামের এক নাসিং হোমে ইন্দ্রকে এনে ভর্তি করে ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ইন্দ্র পোড়েল এর ভাই ফতু পোড়েল দাদাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করার অভিযোগ করে মনসা ওরফে মনোজ মাটি-র নামে আমতা থানায় লিখিত অভিযোগ করে।
ইন্দ্র পোড়েল ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি ১৮ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ার পর মারা যায়। ইন্দ্র পোড়েল অসুস্থ হওয়া থেকে দেবান্দি-র কোয়াক ডাক্তারের কাছে, আমতা হাসপাতাল, উলুবেড়িয়া হাসপাতাল ও বড়দা গ্ৰামের নাসিং হোম পর্যন্ত ছবি পোড়েল সব সময় তার অসুস্থ স্বামী ইন্দ্র পোড়েল এর কাছেই ছিলেন। তার চিকিৎসার সাহায্য করা, তার দেখভাল করা, সেবা যত্ন করতেন।
এই কেসে আমতা কোর্টের বিচারক রোহন সিনহা, আমতা থানার আধিকারিক, পুলিশ, এবং ১৫ থেকে ১৬ জন সাক্ষীর বয়ানের ভির্তিতে মৃত ইন্দ্র পোড়েল এর স্ত্রী ছবি পোড়েল এর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ার কারণে তাকে বেকসুর খালাস দেন। এই কেসের অপর এক অভিযুক্ত মনসা ওরফে মনোজ মাটি’র বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ, ২০০০০(কুড়ি হাজার) টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ (এক ) বছর সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন।