আত্রেয়ী দো: ১৯ মার্চ।এই দিনটির একটি ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। ১৯৭২ সালের ১৯ মার্চ ঢাকায় স্বাক্ষরিত হয়েছিল ‘ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী, সহযোগিতা ও শান্তি চুক্তি’ (The Indo-Bangla Treaty of Friendship,Cooperation and Peace)। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার তিন মাসের মাথায় স্বাক্ষরিত হয়েছিল এই চুক্তি। চুক্তির মেয়াদ ছিল ২৫ বৎসর। তবে, এই চুক্তি ছিল নবায়নযোগ্য। ১৯৯৭ সালের ১৯শে মার্চ মাসে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আর নবায়ন করা হয়নি।তৎকালীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। চুক্তিটি ছিল ১২দফা।
চুক্তির ভূমিকায় চুক্তির প্রণয়ন এবং সম্পাদনার প্রয়োজনীয়তার বর্ণনা রয়েছে। শান্তি, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র এবং জাতীয়তাবাদের একই আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এই আদর্শকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একযোগে সংগ্রাম, রক্তদান এবং আত্মত্যাগের মাধ্যমে বন্ধুত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করার অঙ্গীকার নিয়ে মুক্ত, স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের বিজয় উত্থান ঘটিয়ে সৌভ্রাতৃত্বপূর্ণ ও সৎ প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক রক্ষা করতে এবং উভয় রাষ্ট্রের সীমান্তকে চিরস্থায়ী শান্তি ও বন্ধুত্বের সীমান্ত হিসেবে রূপান্তরের দৃঢ় সংকল্প নিয়ে নিরপেক্ষতা, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, পারস্পরিক সহযোগীতা, অপরের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থেকে এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বকে সম্মান প্রদর্শনের মূলনীতিসমূহের প্রতি দৃঢ়ভাবে আস্থাশীল থেকে, শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা রক্ষার দৃঢ় সংকল্প নিয়ে এবং সম্ভব্য সকল প্রকারের পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে নিজের নিজের দেশের অগ্রগতির লক্ষ্যে উভয় দেশের মধ্যকার বর্তমান মৈত্রীপূর্ণ সম্পর্ক আরও সম্প্রসারিত ও মজবুত করার লক্ষ্যে দৃঢ় সংকল্প নিয়ে স্থায়ী শান্তির স্বার্থে এবং উভয় রাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থের প্রয়োজনে পারস্পরিক মৈত্রী ও সহযোগিতা আরও সম্প্রসারণের জন্য, বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তা জোরদার করার উদ্দেশ্যে আন্তর্জাতিক উত্তেজনা প্রশমনে ও উপনিবেশবাদ, বর্ণবৈষম্যবাদ ও সামন্তবাদ নির্মূল করার প্রয়াসের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, আজকের বিশ্বের আন্তর্জাতিক সমস্যাগুলোর সমাধান যে শুধুমাত্র সহযোগিতার মাধ্যমে সম্ভব, বৈরিতা ও সংঘাতের মাধ্যমে নয় এই বিষয়ে দৃঢ় প্রত্যয়ি হয়ে, রাষ্ট্রসংঘের সনদের নীতিমালা ও লক্ষ্যসমূহ অনুসরণে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।