গতকাল আমরা পালন করেছি বিশ্ব খাদ্য দিবস। এই বিশ্ব খাদ্য দিবসের তাত্পর্য সম্পর্ককে আলোকপাত করলেন
সংবাদ প্রতিখনের প্রতিনিধি আত্রেয়ী দো
“প্রণমীয়া পাটুনী কহিছে জোড় হাতে। / আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে।”
” সন্তানের কল্যাণ কামনায় মায়ের এই ন্যূনতম প্রার্থনাই বুঝিয়ে দেয় আমাদের জীবনে খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা ঠিক কতখানি। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা এই পাঁচটি মানুষের মৌলিক চাহিদা। গতকাল রবিবার আমরা পালন করেছি, ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস’। ১৯৪৫ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিষ্ঠার তারিখকে স্মরণ করার জন্য প্রতি বছর ১৬ই অক্টোবর বিশ্বব্যাপী খাদ্য দিবস পালিত হয়।দিনটি ক্ষুধা ও খাদ্য নিরাপত্তার সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অনেক সংস্থা দ্বারা উদযাপন করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং কৃষি উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক তহবিল। ১৯৭৯ সালের নভেম্বরে FAO (ফুড এন্ড এগ্রিকালচারাল অরগানাইজেশন)-এর ২০তম সাধারণ সম্মেলনে FAO- এর সদস্য দেশগুলি দ্বারা বিশ্ব খাদ্য দিবস উদযাপনের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল৷ হাঙ্গেরির প্রাক্তন কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রী ড. পাল রোমানির নেতৃত্বে হাঙ্গেরিয়ান প্রতিনিধিদল, ২০ তম অধিবেশনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিল৷ FAO সম্মেলন বিশ্বব্যাপী খাদ্য দিবস (WFD) উদযাপনের ধারণা প্রস্তাব করে। তারপর থেকে এটি প্রতি বছর ১৫০ টিরও বেশি দেশে পালন করা হয়ে আসছে। এই দিবস পালনের অন্যতম লক্ষ্য হল দারিদ্র্য এবং ক্ষুধার পিছনের বিষয়গুলি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। এই দিবসের মূল বক্তব্য হল খাদ্য একটি মৌলিক মানবাধিকার। প্রতি বছর বিশ্ব খাদ্য দিবসের আলাদা আলাদা প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়।এই বছরে দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘কাউকে পশ্চাতে রেখে নয়। ভালো উৎপাদনে উত্তম পুষ্টি, সুরক্ষিত পরিবেশ এবং উন্নত জীবন’। কিন্তু সমাজের বাস্তব চিত্রের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যেতে পারে আমাদের মধ্যে এখনও সচেতনতার বড় অভাব। আজও সমাজের একাংশের মানুষ অনাহারে, অপুষ্টির শিকার হয়ে মারা যাচ্ছে আবার একাংশের মানুষ বিলাসিতায় খাবার অপচয় করছে। খাদ্যের অপচয় সম্পর্কে সচেতন হয়ে যত দ্রুত সম্ভব তা প্রতিরোধের ব্যবস্থা করতে হবে। অনুষ্ঠানের বাড়তি খাবার ফেলে না দিয়ে নিরন্ন মানুষগুলোর মধ্যে বিতরণ করুন,এতে খাদ্যের অপচয় রোধের সাথে সাথে ওই মানুষগুলোর ক্ষুধার নিবৃত্তি হবে। আসুন, এই বিশ্ব খাদ্য দিবসে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হই,’আজ থেকে আর একটুও খাদ্য অপচয় নয়’।