স্বরূপম চক্রবর্তী: আমাদের এই সংসারে এমন কিছু মানুষ আজও বর্তমান যাঁরা চিরকাল নিজেদের কিছুটা আড়ালে রাখতেই পছন্দ করেন, নিজেদের নিমগ্ন রেখে শিল্প সৃষ্টিতে মগ্ন হন, সেই রকম মানুষরা আজও আমাদের মধ্যে বিরাজ করছেন। যাঁরা প্রকৃত অর্থেই গুণী, তাঁরা আজও নীরবে কাজ করে চলেছেন। এমনি এক শিল্পীর কথা আজ আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চলেছি, যিনি নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন রবির কিরণের আড়ালে। যিনি প্রমাণ করেছেন, শিল্পীর স্বত্তা, অস্ত্বিত্ব তাঁর শিল্প সৃষ্টিতে, সৃষ্টির মধ্যেই যিনি খুঁজে পান মানসিক শান্তি। এমনই একজন শিল্পী সায়ন্তনী গুপ্ত। গান যাঁর অন্তরআত্মার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে, কবিগুরুর গানে যাঁর সাবলীল গতিবিধি, প্রখ্যাত শিল্পী সেই সায়ন্তনী গুপ্ত ইতিমধ্যেই এমন একটি কাজ নীরবে করে ফেলেছেন, যেটি করার সাহস প্রতিথযশা শিল্পীরাও করতে সাহস পান না। রবীন্দ্র গানের ব্যাকরণকে অমর্যাদা না করে তিনি ইতিমধ্যেই শুরু করেছেন কবিগুরুর অখণ্ড গীতবিতান এর সকল সংগীতের শ্রবণ ও দর্শনের অপরূপ মেলবন্ধন। যার আত্মপ্রকাশ ঘটলো সম্প্রতি ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানীর এক প্রান্তের একটি বেসরকারি স্টুডিওতে, কবিগুরুর অন্যতম সৃষ্টি ভানুসিংহের পদাবলীর সকল গানগুলীর একটি শ্রবণ ও দর্শনের সংকলনের আত্মপ্রকাশের মাধ্যমে। শিল্পী সায়ন্তনী গুপ্ত’র সুললিত কন্ঠে গাওয়া এই গানগুলিকে সাধারণের মাঝে নিয়ে আসার নেপথ্য কারিগর বিশেষ করে প্রখ্যাত যন্ত্রশিল্পী ও সঙ্গীত আয়োজক দেবাশীষ সাহা, ব্যবস্থাপক অরিন্দম ঘোষ, এবং শিল্পীর পরিবারের সকলে।
প্রখ্যাত রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী সুবিনয় রায়ের সুযোগ্য পুত্র রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী সুরঞ্জন রায় তাঁর সুযোগ্যা ছাত্রী সায়ন্তনী গুপ্ত’র অখণ্ড গীতবিতানের শ্রবণ ও দর্শনের অপরূপ মেলবন্ধনের প্রথম সোপান ভানুসিংহের পদাবলির গানের এই সংকলনের মোড়ক উন্মোচন করে গুরু শিষ্য পরম্পরার স্বাক্ষর রেখে গেলেন আগামী প্রজন্মদের জন্য এ কথা বলাই যায়। এইদিনের এই মনোজ্ঞ অন্তর্জালীয় অনুষ্ঠানে তাঁর সুললিত কন্ঠের যাদুতে সকলের মন ভরালেন শিল্পী সায়ন্তনী গুপ্ত। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় আবার নতুনরূপে আমরা পেলাম বাচিক শিল্পী মধুমিতা বসুকে।