গোপনাঙ্গের সঠিক যত্ন

women-hnealthসৌন্দর্য বজায় রাখতে আমরা সকলেই চুল এবং ত্বকের যত্ন নিই, শরীরের যত্ন নিতে শরীরচর্চা এবং ডায়েট ও মেনটেইন করি কিন্তু গোপনাঙ্গ! গোপনাঙ্গের যত্ন কি আমরা সঠিক নিয়মে করে থাকি? আমাদের সকলের ধারণা গোপনাঙ্গ মানেই গোপনীয়তা তাই রূপচর্চা নিয়ে আমরা সরাসরি আলোচনা করলেও গোপনাঙ্গের আলোচনা আমরা গোপন করে যাই কিংবা আলোচনা থেকে বিরত থাকি। কিন্তু গোপনাঙ্গ আমাদের শরীরের সব থেকে সংবেদনশীল অর্থাৎ সেনসিটিভ জায়গা, যা পরিষ্কার রাখলে শরীরের বিভিন্ন রকম রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। গোপনাঙ্গ সঠিকভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না রাখলে ইনফেকশন, চুলকানি, জ্বালার মতো সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। কিভাবে আমরা গোপনাঙ্গের সঠিক নিয়মে যত্ন নিতে পারি সেই বিষয়ে লিখছেন জয়শ্রী

গোপনাঙ্গ পরিষ্কার রাখুন:  সকালে ঘুম থেকে উঠে চোখ মুখ ধোয়ার পাশাপাশি যৌনাঙ্গ বা পুরুষাঙ্গ ভালো করে নর্ম্যাল জল বা ইষৎ উষ্ণ গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। স্নান করার সময় এবং রাত্রে শুতে যাওয়ার আগে যে কোনো ধরনের লোশন ওয়াশ দিয়ে যৌনাঙ্গ বা পুরুষাঙ্গ পরিষ্কার করুন। এরপর কোনো সফট তোয়ালে বা টাওয়েল দিয়ে জায়গাটা মুছে সুতি জাতীয় প্যান্টি বা আণ্ডারওয়্যার পরুন। টাওয়েলটা রোজ অ্যান্টিসেপ্টিক ওয়াশ দিয়ে ধোয়ার চেষ্টা করবেন। অবশ্যই খেয়াল রাখবেন কোনো মোটা খসখসে কাপড় ব্যবহার করবেন না এবং লোশন ওয়াশ কেনার সময় অম্বলত্ত্ব- ক্ষার পরিমাণ অর্থাৎ pH balance দেখে কিনবেন।

women-hnealth.3

শেভ করুন:   আমাদের যৌনাঙ্গ বা পুরুষাঙ্গ হেয়ারী এরিয়া তাই সেখানের হেয়ার বা কেশ বড় হলে শেভ করা আবশ্যক। কিন্তু হেয়ার রিমুভাল ক্রিম ব্যবহার বা ওয়াক্সিং করা থেকে বিরত থাকুন কারণ আগেই জেনেছেন গোপনাঙ্গ ভীষণ সেনসিটিভ জায়গা সেক্ষেত্রে কোনোরকম কেমিক্যাল জাতীয় প্রোডাক্ট ব্যবহার না করাই ভালো। ক্লিন সেভ অনেকেই পছন্দ করেন সেক্ষেত্রে নতুন রেজার ব্যবহার করুন এবং যেদিকে হেয়ার গ্রোথ সেই ডিরেকশনে রেজার টানুন, উল্টো ডিরেকশনে রেজার টানলে হেয়ার গ্ৰোথের সময় সমস্যা হতে পারে যেমন র‍্যাশ বেরানো, ফুলে যাওয়া, চুলকানি ইত্যাদি। তাছাড়া গোপনাঙ্গের হেয়ার বিভিন্নরকম ব্যাকটেরিয়া, পোকামাকড় থেকে আমাদের যৌনাঙ্গকে রক্ষা করে তাই হালকা হেয়ার থাকা ভালো সেক্ষেত্রে ট্রিম করা যেতে পারে। women-hnealth.-2

পারফিউম বা বডি স্প্রে ব্যবহার করবেন না:   প্রাতঃকর্ম যেমন আমাদের শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বার করে ঠিক তেমনি ডিসচার্জ আমাদের গোপনাঙ্গের বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়। তাই আমাদের যৌনাঙ্গ বা পুরুষাঙ্গ দিয়ে ডিসচার্জ হওয়া এবং সেখান থেকে স্মেল হওয়া খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। তাই সেই স্মেল বা গন্ধ ঢাকতে কোনোরকম কেমিক্যাল জাতীয় পারফিউম, ট্যালকম পাউডার, বডি স্প্রে ব্যবহার করবেন না। এর ফলে ত্বক ফুলে যাওয়া, লাল হয়ে যাওয়া এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেটা করবেন তা হল, টয়লেটের পর জায়গাটা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

ব্লিচিং:   আমাদের যৌনাঙ্গ বা পুরুষাঙ্গ শরীরের বাকি অংশের তুলনায় কিছুটা কালো হয়। তবে বারবার রেজার ব্যবহার বা কেমিক্যাল জাতীয় প্রোডাক্টের ব্যবহার জায়গাটাকে অনেক বেশি কালো করে, তা থেকে বিরত থাকুন। তবে নর্ম্যাল কালো রঙকে ফর্সা করার জন্য অনেকে ব্লিচিং জাতীয় প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু এই ধরনের প্রোডাক্টের ব্যবহার গোপনাঙ্গের ক্ষতি করে। women-hnealth-4

খাবারের দিকে নজর দিন:   প্রচুর পরিমাণে জল খান। বাইরের খাবার, জাঙ্ক ফুড, ফাস্টফুড, ভাজাভুজি খাবার এড়িয়ে চলুন। যতটা সম্ভব ভিটামিন, প্রোটিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাদ্য তালিকায় রাখুন।

পোশাক:   এখনকার ব্যস্ত জীবনে আমরা সকলেই প্রায় বেশিরভাগ সময়টা বাইরে কাটাই। সেই কারণে নিজেদের মেনটেইন করা, সুন্দর দেখানো আবশ্যক। তাই আমরা অনেকেই টাইট ফিটিংস্ ড্রেস পরতে পছন্দ করি। সারাদিন আমরা যাই পোশাক পরি না কেন, রাত্রে অবশ্যই ঢিলে ঢালা সুতির পোশাক পরা উচিৎ। কারন আমরা যেমন শ্বাস – প্রশ্বাস নিই, তেমনি আমাদের ত্বকেরও শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রয়োজন বিশেষ করে গোপনাঙ্গের। আমাদের ত্বক শ্বাস নিতে পারলে ত্বক সুস্থ থাকে, কোমল এবং সুন্দর হয়ে ওঠে। যারা সারাদিন ঘরে থাকেন তাদের উচিৎ সারাদিনের পোশাক বদলে রাত্রে পরিষ্কার পোশাক পরে শোওয়া।

পোশাক ধোওয়া:   পোশাক ধোয়ার পর আমরা জামাকাপড় ছাদে বা বারান্দায় মেলে থাকি। জামাকাপড় মেলার আগে জায়গাটা ভালো করে পরিষ্কার করে নিন, যাতে কোনোরকম পোকামাকড় না থাকে বিশেষ করে যেখানে অন্তর্বাস শুকাতে দেবেন।

সঙ্গমের সময় সাবধানতা:   সংগম অর্থাৎ সেক্সের আমরা অনেকেই প্রোটেকশন ব্যবহার করি। সেটা অবশ্যই খুব ভালো। কিন্তু অনেকেই আমরা প্রোটেকশন নিতে পছন্দ করি না। সেক্ষেত্রে অবশ্যই সেক্সের আগে এবং পরে যৌনাঙ্গ এবং পুরুষাঙ্গ ভালো করে পরিষ্কার করা উচিৎ। সেক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেক কম।

women-hnealth-5

ডাক্তারি পরামর্শ:   সাদা জলের মত বা ঋতুস্রাবের মতো সাদা গাঢ় রঙের হালকা গন্ধযুক্ত ডিসচার্জ হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু যদি তার বদলে অন্য রঙের ডিসচার্জ, দই বা ময়দা ড্যালা বা চটচটে, আঁশানি বা দুর্গন্ধযুক্ত ডিসচার্জ এবং যন্ত্রণা হয় তবে সাথে সাথে ডাক্তারি পরামর্শ নিন। এছাড়াও যদি যৌনাঙ্গ বা পুরুষাঙ্গে এলার্জি, চুলকানি, ফুলে ওঠা, ব্যাথা হওয়া, জ্বালা করা বা পুঁজ হওয়া এই জাতীয় সমস্যা হয় তবে অতি অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

বিশেষ সাবধানতা-মেন্স বা ঋতুস্রাব:   মাসিক বা পিরিয়ডের সময় নিজের প্রতি একটু বেশি খেয়াল রাখুন। পিরিয়ড বা ঋতুস্রাবের সময় ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ভয় বেশি থাকে। সারাদিন একটা স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করলে ভিজে জায়গায় ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধতে পারে। যোনিতে ইনফেকশনের সম্ভাবনা থাকতে পারে। তাই প্রতি ৫ – ৬ ঘন্টা অন্তর প্যাড বদলান।

সামান্যতম সচেতনেতাই একমাত্র পারে আমাদের সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করাতে, কাজেই আমাদের সকলেরই উচিত নিজেদের সুস্থ রাখতে উপরিল্লিখিত উপায়গুলিতে একটু নজর দেওয়া প্রয়োজন।

201251443_2052819018191856_7318174547572268134_n149560606_1955498754590550_7537541499495602122_o149274739_1955175504622875_8761804105952090197_oadvt112-for-advt-sankha-sengnc-advt-6x4-for-webLATEST ADVT OF JOTISHadvt-1advt-4advt-3advt-5advt-banner.3

error: Content is protected !!

Discover more from Sambad Pratikhan

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading