ডাক্তার যখন প্রতিমা শিল্পী

pppp2

প্রবীর বোস, সংবাদ প্রতিখন:  খেলার ছলেই শুরু করেছিলেন ঠাকুর গড়া।  ভদ্রেশ্বর শান্তিনগরের বালক বিপ্লবেন্দু। তখন তার বয়স মাত্র ৬ বছর তারপর আস্তে আস্তে চল্লিশ বছর পার হয়ে গেছে। কিন্তু ঠাকুর তৈরি বন্ধ হয়নি কোন বছরের জন্যই। বিপ্লবেন্দু ধীরে ধীরে বড় হয়েছে। প্রথমে চন্দননগর কানাইলাল স্কুল তারপর সেখান থেকে কলকাতা মেডিকেল কলেজ। বর্তমানে মেডিকেল কলেজের ফ্যাকাল্টি হিসেবে কাজ করছেন তার সঙ্গে ওয়েস্টবেঙ্গল ব্লাড ব্যাংকের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ ( স্টেট পোগ্রাম অফিসার, স্টেট ব্লাড সেল) সামলাচ্ছেন ডক্টর বিপ্লবেন্দু তালুকদার। এই গুরুদায়িত্ব আর প্রচণ্ড ব্যস্ততার মধ্যেও প্রত্যেকদিন রাতে বাড়ি ফিরে নিজেদের বাড়ির আঙিনায় নিজের হাতে তৈরি করছেন মা জগদ্ধাত্রী প্রতিমা।

কাঠামোয় খড় বাঁধা থেকে মাটি মাখা, মূর্তি তৈরি এবং তারপরে রং করা থেকে শুরু করে মায়ের চক্ষুদান সমস্ত কাজটাই নিজের হাতে একা করেন বিপ্লবেন্দু। মাঝেমধ্যে বাড়ির লোকজন, তার দিদি, স্ত্রী-মেয়ে হাত লাগান তাকে সাহায্য করার জন্য। একজন কর্মব্যস্ত ডাক্তার প্রতিদিন রাত্রে যে নিপুণ হাতে মা জগদ্ধাত্রীর মূর্তি তৈরি করছেন তা দেখলে সত্যিই অবাক হয়ে যেতে হয়। প্রতিদিন কাজ করে ক্লান্ত হয়ে রাত ন’টার পরে বাড়ি ফেরা। কিন্তু তার পর যখন জগদ্ধাত্রীর মূর্তি তৈরি শুরু করেন তখন কোন যাদুবলে সব ক্লান্তি ভ্যানিস। শেষ দিকে এসে রং-তুলি ধরে দেবী মূর্তি রং করা আর শেষে মায়ের চক্ষুদান। মাঝরাতে পর্যন্ত চলে তার এই মূর্তি তৈরি। পরের দিন সকালে উঠেই আবার দৌড়াতে হবে হসপিটালে, সেখানে হয়তো কোনো মুমূর্ষু রোগী বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন এর জন্য অপেক্ষা করছে।

output_9W9bpB

বিপ্লবেন্দু বাবু বলেন যেখানে সাইন্স শেষ হচ্ছে সেখান থেকেই শুরু হচ্ছে সুপার পাওয়ার। আর মা জগদ্ধাত্রীই হয়তো তাকে শক্তি যোগায় তার মূর্তি তৈরি করার জন্য। বিপ্লবেন্দু বাবুর স্ত্রী বলেন চক্ষুদানের পরেই যেন মায়ের মূর্তিতে প্রাণ চলে আসে। বাড়ির আঙিনায় তখন কয়েকদিনের জন্য এক নতুন সদস্য। পুজোর কয়েক দিন বাইরে থেকে প্রচুর বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজন আসেন। তখন কয়েক দিনের জন্যই এই শান্ত বাড়িটি উৎসবমুখর প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে। চার দিন ধরে চলে ধুমধাম। দশমীর দিন মাকে বিদায় দেওয়ার সময় বাড়ির লোকের সঙ্গে সঙ্গে মায়ের চোখের কোনেও যেন হালকা চিকচিক করে ওঠে। সবাইকার মন বিষাদগ্রস্ত হয়ে যায়। আবার সারা বছরের ব্যস্ত সিডিউল। আবার এক বছরের জন্য অপেক্ষা।

gif advtUntitled-3Untitled-1Untitled-2advt-4advt-1advt-3

%d bloggers like this: