বিশেষ প্রতিবেদন: বিশিষ্ট সাহিত্যিক এবং সাংবাদিক নিমাই ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার (২৫ জুন, ২০২০) সকালে কলকাতার রানীকুঠিতে নিজের বাসভবনে ৮৯ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মেমসাহেবের স্রষ্টা। ১৯৫০ সালে ‘লোকসেবক’ পত্রিকা দিয়ে সাংবাদিকতা জীবনের শুরু। পরবর্তীতে দিল্লিতে গিয়ে বেশ কয়েকটি কাগজের পার্লামেন্ট, ডিপ্লোম্যাটিক ও পলিটিক্যাল করেসপন্ডেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৫০ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত ৩০ বছরের সাংবাদিকতা জীবনের বড় অংশই কাটিয়েছেন দিল্লিতেই। নিমাই ভট্টাচার্যের সাহিত্য চিন্তা তাঁর জীবনচর্চার পরিপূরক হিসাবে পরিগণিত হয়ে সাধারণের কাছে পরিগণিত হয়েছে বারবার। ১৯৬৩ সালে তাঁর লেখা একটি উপন্যাস কলকাতার সাপ্তাহিক ‘অমৃতবাজার’ পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয় এবং সাহিত্যামোদীদের নিকট ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করে। পরবর্তীকালে ‘রাজধানী নৈপথ্য’ রিপোর্টার. ভি. আই. পি এবং পার্লামেন্ট স্টীট নামক চারখানি উপন্যাস ঐ একই পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে সাংবাদিকতার পাশাপাশি নিমাই ভট্টাচার্য পূর্ণোদ্যমে আরো আরো উপন্যাস লেখা শুরু করেন। ‘মেমসাহেব’, ‘ডিপ্লোম্যাট’, ‘মিনিবাস’, ‘মাতাল’, ‘ইনকিলাব’, ‘ব্যাচেলার’, ‘ইমনক্যলাণ’, ‘ডিফেন্স’, ‘কলোনী’, ‘প্রবেশ নিষেধ’, ‘কেরানী’, ‘ভায়া ডালহৌসী’, ‘হকার্স কর্নার’, ‘রাজধানী এক্সপ্রেস’, ‘নিমন্ত্রণ’, ‘নাচনী’, ‘অ্যাংলো ইন্ডিয়ান’, ‘ডার্লিং’, ‘ম্যাডাম’, ‘ওয়ান আপ-টু-ডাউন’, ‘গোধুলিয়া’, ‘প্রিয়বরেষু’, ‘আকাশ ভরা সূর্য তারা’, ‘মোগল সরাই জংশন’, ‘ইওর অনার’, ‘ককটেল’, ‘অনুরোধের আসর’, ‘যৌবন নিকুঞ্জে’, ‘শেষ পরানির কড়ি’, ‘হরেকৃষ্ণ জুয়েলার্স’, ‘পথের শেষে’ প্রভৃতি প্রকাশিত উপন্যাসগুলি উল্লেখযোগ্য। বাংলা সাহিত্যের এই খ্যাতিমান ঔপন্যাসিক নিমাই ভট্টাচার্য ১৯৩১ সালের ১০ এপ্রিল কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। যশোরের সম্মিলনী ইন্সটিটিউশনে ক্লাস নাইন পর্যন্ত পড়াশুনা করেছেন তিনি। তারপর ১৯৪৭ এর দেশভাগের সময় চলে যান কলকাতায়। পেশাগত জীবন শুরু করেন সাংবাদিকতা দিয়ে। প্রখ্যাত এই প্রবীণ সাহিত্যিকের প্রয়াণে শোকের ছায়া সমগ্র বাংলার সাহিত্যের দুনিয়ায়।