লকডাউনের জেরে সংকটে মৎস্যজীবীরা

basir-9সৌমাভ মণ্ডল, বসিরহাট, উত্তর ২৪ পরগণা:  লকডাউনের জেরে একদিকে পরিবহন ব্যবস্থা অন্যদিকে খাবারের সমস‍্যা নিয়ে উভয় সংকটে পড়েছে বসিরহাটের মৎস্যজীবীরা। বিশেষ করে বসিরহাট মহকুমার বাদুড়িয়া, বসিরহাট ১নং ব্লক সহ বেশ কয়েকটি ব্লকে দেশীয় মাগুর চাষ হয়। যেসব মাগুরের ওজন ৫০০ গ্রাম থেকে ২কিলো পর্যন্ত হয়। এইসব মাছগুলো ব্যাঙ্গালোর, দিল্লি, মহারাষ্ট্র, গুজরাট সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে পাড়ি দিত। বিশেষ করে হাসপাতাল গুলিতে রোগীদের প্রোটিন জাতীয় খাদ‍্যের জোগান দিতে এই মাগুরের চাহিদা  অপরিসীম। কিন্তু আজ এই মাগুর চাষের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ী থেকে মৎস্যজীবীদের রুজিরোজগার হয়েছে বিপন্ন। খাদ্যের অভাবে মাছ মরে যাচ্ছে, মাছের ভেঁড়িতে মরা মাগুর মাছ ভেসে উঠছে। সব মিলিয়ে এই মাছ চাষিরা আগামীদিনে গভীর সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে। ক্ষতি হচ্ছে কয়েকশো কোটি টাকার। ব্যবসায়ী মনিরুল মন্ডল বলেন, “এই মহাকুমা থেকে মাসে প্রায় ১০০ টন দেশি মাগুর যেত দেশের বিভিন্ন রাজ্যের বাজার ও হাসপাতাল গুলিতে; সেগুলি বন্ধ হয়েছে। প্রতি মাসে প্রায় দেড়শ কোটি টাকার ব্যবসা হতো। প্রতিদিন ব‍্যাপক অঙ্কের আর্থিক লেনদেন হত, সেটাও বন্ধ। গত ৩৫ দিন আগে একবার ব্যবসা হয়েছিল তারপর থেকে তা পুরোপুরি বন্ধ। এর সঙ্গে যুক্ত প্রায় ৪০ হাজার মৎস্যজীবীদের পাশাপাশি প্রায় ৫ লক্ষ মানুষের দৈনন্দিন রুজি রোজগার যেমন হারিয়েছে তেমনই গোটা পরিবারও গভীর সংকটে। সবমিলিয়ে সরকার যদি পাশে না দাঁড়ায় তাহলে আগামী দিনে এই মৎস্য চাষ থেকে থেকে হয়তো মুখ ফিরিয়ে নিতে হবে মৎস্যজীবীদের। পাশাপাশি অন্ধপ্রদেশ থেকে এই মাছের খাবার আসতো, সেটাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যার ফলে একদিকে মাছের ভেঁড়িতে মাছ মরছে, অন্যদিকে পরিবহনের অভাবে ভিন রাজ্যে পাঠানো যাচ্ছে না মাছ। উভয় সংকটে এই চাষ পুরোপুরি বন্ধ। তাই সরকারের কাছে তাদের পাশে দাঁড়ানোর আবেদন করেন।

%d bloggers like this: