মুখমন্ত্রীর হাত ধরে সূচনা হ’ল ৬২৩ বছরের মাহেশের রথযাত্রা উত্‍সবের

MAMATA_ROTHস্বরূপম চক্রবর্তী, হুগলিঃ “রথযাত্রা লোকারণ্য মহা ধুমধাম, ভক্তেরা লুটায়ে পথে করিছে প্রণাম।” কবির এই কথাগুলির প্রকৃত রূপ পরিলক্ষিত হয় যেমন ভারতের পুরীধামের রথে, ঠিক তেমনি লক্ষ করা যায় পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার প্রাচীন শহর শ্রীরামপুরের অন্তর্গত মাহেশের জগন্নাথ দেবের রথযাত্রায় যা ভারতের দ্বিতীয় প্রাচীন রথযাত্রা যে রথযাত্রা এই বছর ৬২৩ বছরে পদার্পণ করল। এইবছর রথের দড়ি টেনে মাহেশের রথযাত্রার শুভ সূচনা করলেন রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাহেশের রথযাত্রার ইতিহাসে এই বছরই প্রথম রাজ্য প্রশাসনের প্রধান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী’র উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হ’ল সুপ্রাচীন এই রথযাত্রা। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী জগন্নাথ মন্দিরে উপস্থিত হয়ে বিশেষ পূজায় অংশ নেন।

doodhwala.jpg

ইতিহাস প্রসিদ্ধ এই রথযাত্রায় উপস্থিত হয়ে আপ্লুত মুখ্যমন্ত্রী মাহেশকে কেন্দ্র করে পর্যটন কেন্দ্রের ও এই মন্দির এলাকা সংলগ্ন এলাকায় যাত্রীনিবাস তৈরি করার কথা ঘোষণা করেন। এদিন এই উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শ্রীরামপুর লোকসভার সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল, বিধায়ক সুদীপ্ত রায়, বিধায়ক স্নেহাশীষ চক্রবর্তী, বৈদ্যবাটি পৌরসভার পুরপিতা অরিন্দম গুইন, মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরের সেবাইত পিয়াল চক্রবর্তী সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

লক্ষাধিক ভক্তের সমাগমে শুরু হওয়া সুপ্রাচীন, ঐতিহাসিক এই রথযাত্রা উত্‍সবকে কেন্দ্র করে মাহেশে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় এক মাস ব্যাপী মেলা। ইতিহাস প্রসিদ্ধ এই রথযাত্রা উত্‍সবের ইতিহাসের দিকে দৃষ্টি দিলে যে বিষয়টি আমাদের সামনে উঠে আসে তা এইরূপ- ধ্রুবানন্দ ব্রহ্মচারী নামে এক বাঙালি সাধু চতুর্দশ শতকে পুরীতে জগন্নাথদেবকে নিজের হাতে ভোগ রেঁধে খাওয়াবেন বলে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুরীর মন্দিরের পূজারীদের বাধায় তিনি তা করতে না পেরে মনের কষ্টে আমরণ অনশনে বসলেন। অনশনের তিন দিন পরে জগন্নাথদেব তাঁকে দেখা দিয়ে ফিরে যাওয়ার আদেশ দেন এবং তিনি বলেন মাহেশে গিয়ে সেখানে তাঁর (জগন্নাথের)মূর্তি গড়ে সেখানে সাধন করতে। এক বর্ষার দিনে একটি নিমকাঠ ভেসে আসে মহেশের গঙ্গার জগন্নাথ ঘাটে, সেই নিমকাঠ থেকেই বানানো জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা’র মূর্তি আজও সমান ভাবে পূজিত হয়ে চলেছে।

মাহেশের বর্তমান রথটি ১৫০ টন ওজনের এবং উচ্চতায় ৫০ ফুট। সবথেকে উলেক্ষ্য এত ভারী এই সুপ্রাচীন রথটি চালানোর জন্য কোনও রকম যন্ত্রের প্রয়োজন পড়ে না। সাধারণ মানুষের টানেই জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা জগন্নাথ বাড়ি থেকে প্রায় ১ কিমি পথ পেরিয়ে তাঁদের মাসির বাড়িতে উপস্থিত হন। আবার আট দিনের মাথায় ঠিক একই ভাবে তাঁরা নিজ গৃহে ফিরে আসেন উল্টোরথের দিনে। (ছবি-দিপান্বীতা দাস, এস.পাল ও স্বরূপম চক্রবর্তী)

1efab-9a4f02_51435a5163204d4c9eb67ab6f3a56a68mv2

3b749-9a4f02_0a1a6303df76450fb31ff36c7368e2a1mv2

294a8-9a4f02_f45cceadc93a463d8fc254485d0b8a25mv2

9a4f02_2e8f603055494c9a9c101bc7308762c1~mv2.jpg

09828-9a4f02_2afa9dc21c6840f781c9711a60cb7e45mv2

afc10-9a4f02_3b93dab5c7d14f67afae52ceac3ab2d5mv2

doodhwala.jpg

%d