সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, কলকাতাঃ রাজনীতি শব্দটির অভিধানগত অর্থ হ’ল রাজার নীতি। রাজা তাঁর অধীনস্ত প্রজাদের মঙ্গল কামনা করে তাঁদের সুখ-সাচ্ছন্দ, সুবিধা-অসুবিধা, সুখ-দুঃখ’র প্রতি বিশেষ নজর দিয়ে সদাই তাঁদের পাশে ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন এটাই কাম্য। বর্তমানে রাজারা আর নেই, তার বদলে আমাদের দেশের শাসনভার তুলে নিয়েছেন আমাদের ভোটে নির্বাচিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। আর এই সকল প্রতিনিধিরা প্রত্যেকে সরকারী প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে বিরাজ করছেন স্ব-মহিমায়। আমরা আমাদের হাতের কাছে সব সময় যে সকল রাজ প্রতিনিধিদের পাই বা পেতে পারি তাঁরা হচ্ছেন আমাদের এলাকার পৌর বা পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা। জনগণের বিশেষ বাসনা থাকে তাঁদের ঘিরে, জনগণ ভাবেন এই সকল স্থানীয় জন প্রতিনিধিরা তাদের পাশে সদাই থাকবেন।
তবে কতজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব জনগণের এই আশা পূরণ করেন বা করতে সচেষ্ট হন তা আতস কাঁচের মধ্য দিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে হয়। তবুও আমাদের হাতের পাঁচ আঙুল যেমন সমান হয় না তেমনি এই সকল স্থানীয় রাজনৈতিক মানুষগুলিও সবাই সমান নয়। এঁদের মধ্যে কেউ কেউ সদা ব্যস্ত তাঁর এলাকার উন্নতিতে, তাঁর এলাকার সকল মানুষদের পাশে থেকে তাঁদের সেবা করতে। এমনই এক ব্যক্তিত্ব কলকাতা কর্পোরেশনের ৪ নং ওয়ার্ডের পৌর প্রতিনিধি এলাকার সকলের কাছের মানুষ-সকলের আত্মার আত্মীয় গৌতম হালদার। যিনি সদা নিবেদিত প্রাণ তাঁর পৌর এলাকার বাসিন্দাদের ভালভাবে পরিষেবা প্রদান করতে, তাঁদের পাশে থেকে তাঁদের নানান অসুবিধায় তাঁদের ত্রাতা হয়ে দাঁড়াতে। গৌতম বাবু তাঁর ওয়ার্ডের উন্নয়নে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন একথা এই ওয়ার্ডের আনাচে-কানাচে কান পাতলেই শোনা যায়।
এছাড়াও তিনি এলাকার দুঃস্থ মানুষদের পাশে সদাই তাঁদের পরিত্রাতা হয়ে সদা বিরাজ করছেন। সদ্য ঘটে যাওয়া একটি ঘটনায় আবারও তাঁর চরিত্রের মানবিক দিকটি ধরা পড়ল। গৌতম হালদারের পৌর এলাকার তারিণী চরণ ঘোষ লেনের অন্তর্গত সবজি বাগান এলাকার বাসিন্দা দরিদ্র সুরজিত রঙ। কয়েকমাস আগে এক দুর্ঘটনায় তিনি গুরুতর আহত হন এবং তাঁর পা বিশেষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বাদ দেবার উপক্রম হয়।
এহেন সুরজিত রঙের চিকিত্সার জন্য এগিয়ে আসেন ওই ওয়ার্ডের পৌর প্রতিনিধি মানবিক মুখ গৌতম হালদার। সুরজিত বাবু বলেন তাঁর পা দুটি ক্রমশঃ পচে যাবার উপক্রম হচ্ছিল, অপরদিকে অপারেশন করতে তাঁর প্রয়োজন ছিল প্রায় ৩ লক্ষ টাকার। অথচ তিনি মাত্র ২১ হাজার টাকা যোগাড় করতে পেরেছিলেন। সবদিক থেকে সব রকম আশা ভরসা শেষের সময়ে তাঁর কাছে তাঁর অপারেশন করানোর জন্য এগিয়ে আসেন গৌতম হালদার। তিনি নিজে থেকে ওই ব্যক্তির অপারেশনের জন্য ৩ লক্ষ টাকার ব্যবস্থা করে দেন এবং আজ সুরজিত বাবু বেশ সুস্থ। সুরজিত বাবুর কথায় গৌতম বাবু তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন তাঁর পাশে সবসময় থাকবেন এবং আগামীতে তাঁর কোনরকম প্রয়োজন পড়লে গৌতম বাবুর অকৃপণ হাত আবারও সাহায্যের ডালি নিয়ে হাজির হবে।
আসলে মানুষ গৌতম হালদার এই রকমই এক অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। যিনি নিজের কাজে সদাই নিজেকে ডুবিয়ে রেখেছেন সাধারণ মানুষদের পাশে থেকে তাঁদের সকল রকম সমস্যার সমাধানে। সত্যি এমন মানুষদের আজ আরও বেশি করে প্রয়োজন আমাদের রাজ্যে। যাঁরা সকল ধর্মের উর্দ্ধে উঠে, জাত-পাতের বালাই না করে মানব সেবাকেই নিজেদের জীবনের মূলমন্ত্র হিসাবে গ্রহণ করেছেন। (নিজস্ব চিত্র)