নিজস্ব প্রতিবেদনঃ ভোট… আর এ যে সে ভোট নয় এত একেবারে ভারতের মত সর্ববৃহত্ রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক অধিকার পালনের এক উত্সব। এই বছরটা ভারতের সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের বছর। সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের প্রথম পর্বে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার (সংরক্ষিত) এবং আলিপুরদুয়ার (সংরক্ষিত) কেন্দ্রের ভোটাররা আগামী ১১ই এপ্রিল তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। প্রথম পর্বের ভোটগ্রহণের জন্য ১৮ই মার্চ বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ আগামী ২৫শে মার্চ। পরদিন, অর্থাৎ ২৬শে মার্চ মনোনয়নপত্রগুলি পরীক্ষা করে দেখা হবে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৮শে মার্চ। অপরদিকে দ্বিতীয় পর্বে পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি (সংরক্ষিত), দার্জিলিং এবং রায়গঞ্জ কেন্দ্রের ভোটাররা আগামী ১৮ই এপ্রিল তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। দ্বিতীয় পর্বের ভোটগ্রহণের জন্য গত ১৯শে মার্চ বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ আগামী ২৬শে মার্চ। পরদিন, অর্থাৎ ২৭শে মার্চ জমা পড়া মনোনয়নপত্রগুলি পরীক্ষা করে দেখা হবে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৯শে মার্চ। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, সেজন্য ভারতের নির্বাচন কমিশন ভোটদাতাদের সুবিধার্থে একটি হেল্পলাইন ও একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করেছে। হেল্পলাইন নম্বরটি হ’ল একটি টোল ফ্রি নম্বর ১৯৫০। ভোটার তালিকায় নাম থাকা, সচিত্র পরিচয়পত্র, ভোট দেওয়ার তারিখ, সংসদীয় কেন্দ্রের নাম, বুথ, যে কেন্দ্রে ভোট দেবেন, সেই বুথের আধিকারিকের নাম, ভিন্নভাবে সক্ষম ভোটারদের প্রয়োজনীয় নিবন্ধীকরণ, অনলাইনে নাম নথিভুক্তকরণ, ভোটার তালিকায় সংশোধন, অভিযোগ জানানো সহ যে কোনও সমস্যার সমাধান এখানে ফোন করে জানানো যাবে। এছাড়া, একই উদ্দেশ্যে ‘ভোটার হেল্পলাইন’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ-ও চালু হয়েছে। ভোটদাতারা এই মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করেও ১৯৫০’র মাধ্যমে তাঁদের যাবতীয় প্রশ্নের জবাব পাবেন। এছাড়াও http://www.nvsp.in এই পোর্টাল থেকেও এইসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে। বর্তমানে এই নির্বাচনী মরশুমে ছুটির দিন ও রবিবার সহ সবসময়েই এই হেল্পলাইন চালু থাকবে। আরও বেশি করে ভোটারদের কাছে পৌঁছনোর লক্ষ্যে সর্বভারতীয় এই হেল্পলাইন ১৯৫০ সব রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের ওয়েবসাইটেও দেওয়া আছে। ভারতের নির্বাচন কমিশন ভোট গ্রহণ কেন্দ্রগুলিতে সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্রের পরিবর্তে বিকল্প নথিপত্র পেশ করেও ভোটাধিকার প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী একজন ব্যক্তি সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্রের পরিবর্তে চিত্র সম্বলিত পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, কর্মক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের দেওয়া সচিত্র পরিচয়পত্র, ব্যাঙ্ক বা ডাকঘরের ছবি সম্বলিত পাসবুক, প্যান কার্ড, এমজিনারেগা’র জব কার্ড, স্বাস্থ্য বিমা সংক্রান্ত স্মার্ট কার্ড, সাংসদ, বিধায়ক এবং বিধান পরিষদের সদস্যদের প্রদেয় সরকারি সচিত্র পরিচয়পত্র এবং আধার কার্ড পেশ করে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় যেটি সেটি হলো এবার থেকে ব্যালট পত্রেও ভোট প্রার্থীর ছবিও থাকছে। নির্বাচন কমিশন ব্যালট পত্রে ভোট প্রার্থীর ছবি ছাপানোর নির্দেশ দিয়েছে। বৈদ্যুতিন ভোট যন্ত্রের ব্যালট ইউনিটে এই ব্যালট পত্র রাখা থাকে। এছাড়াও পোস্টাল ব্যালট পত্রেও ভোট প্রার্থীর ছবি থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ব্যালট পত্রে ছবি প্রকাশের জন্য ভোট প্রার্থীকে স্ট্যাম্প আকারের দুটি সাম্প্রতিক ছবি জমা দিতে হবে। উল্লেখ করা যেতে পারে ভোট প্রার্থীদের সাম্প্রতিক ছবি মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সেঁটে দেওয়ার জন্য মনোনয়নপত্রে একটি সুনির্দিষ্ট জায়গা থাকে। ফর্ম নম্বর ২৬এও এ ধরনের ছবি জুড়ে দেওয়া প্রয়োজন। মনোনয়নপত্রে সংশোধনের প্রেক্ষিতে কমিশন ভোট প্রার্থীদের মনোনয়নপত্রের জন্য একটি এবং ফর্ম নম্বর ২৬এর জন্য আরও একটি সাম্প্রতিক সময়ের ছবি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। সব মিলিয়ে বেশ জমজমাট ভারতের সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন। (নিজস্ব চিত্র)