অভিষেক চক্রবর্তী, পশ্চিম মেদিনীপুরঃ ডাইনি সন্দেহে পিটিয়ে খুন, তারপর মৃতদেহকে ফেলে রেখে চলল নাচ গান। চরম অমানবিকতার ছবি ঘাটাল থানার ঈশ্বরপুর গ্রামের আদিবাসী পাড়ায়। গ্রামে বেশ কয়েকদিন ধরেই গরু ছাগল মারা যাচ্ছিল, রোগে ভুগছিল গ্রামের বেশ কয়েকজন আদিবাসীও। এরপরই গ্রামের জানগুরু নামে পরিচিত শ্যামলী মান্ডি গ্রামের ৫ মহিলাকে ডাইনি সন্দেহে চিহ্নিত করেন। জানগুরুর নিদানে আদিবাসীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলাকালীনই রবিবার গ্রামেই পাঁচ মহিলা কে বেঁধে বেধড়ক পেটানো হয়। ডাইনি বলে স্বীকার করানোর জন্যই লাঠি দিয়ে পেটানো হয় মহিলাদের। লাঠির আঘাতে গ্রামেরই আদরমনি হাঁসদা(৫০) নামে এক মহিলা ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে মারা যায়। এরপর জানগুরুর নির্দেশে মৃতদেহ ফেলে রেখেই চলে নাচ গান। জানগুরুর কথায় মৃত আদরমনি ছিল প্রকৃত ডাইনি। ঘটনায় স্তম্ভিত গোটা এলাকা। আদিবাসী এলাকা হওয়ায় পুলিশ কার্যত নীরব দর্শক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। পুলিশের সামনেই চলে মৃতদেহ ফেলে নাচ গান।
শেষমেষ ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। মৃতদেহ ও আহত মহিলাদের উদ্ধার করে পাঠানো হয়েছে ঘাটাল হসপিটালে। ডাইনি অপবাদ দিয়ে ঘিরে বারবার প্রশাসনের তরফ থেকে নানা সচেতনতামূলক প্রচার করা হলেও তা এখনও যে প্রচলিত চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল ঘাটালের ঘটনা। ঘটনায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। এলাকা সম্পূর্ণ থমথমে। প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিরা এই মুহূর্তে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। (ছবি-অভিষেক চক্রবর্তী)