রবিবার ৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ সকালে হুগলি জেলার শেওড়াফুলি সুরেন্দ্রনাথ বিদ্যানিকেতনের সুরেন্দ্রনাথ ভবনে সঙ্গীতগুরু সলিলচন্দ্র ঘোষের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে এক বছরব্যাপী শ্রদ্ধাঞ্জলি শুভ সূচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয় সমবেত রবীন্দ্র সংগীতের মধ্য দিয়ে। মঙ্গলদ্বীপ জ্বালিয়ে সারা বছর ব্যাপী এই অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করলেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথিবৃন্দ। হুগলি জেলার ইতিহাসে শেওড়াফুলির রাজবাড়ির অবদান অনেকটাই। এই রাজবাড়ির সুযোগ্য সন্তান, সংগীতগুরু সলিলচন্দ্র ঘোষ, যাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় শান্তিনিকেতন ও কলকাতার পর হুগলির শেওড়াফুলি হয়ে উঠেছিল রবীন্দ্র ও সাহিত্য চর্চার এক উল্লেখ্যযোগ্য অঞ্চল। আগামী বছর ২০১৯ সংগীতগুরু সলিলচন্দ্র ঘোষের জন্মের শতবর্ষ। জেলা তথা সারা বাংলার অন্যতম সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব সলিলচন্দ্রের জন্মের শতবার্ষিকীকে স্মরণ করে রাখতে সংগীতগুরু সলিলচন্দ্র ঘোষ শতবর্ষ উদযাপন কমিটি আয়োজন করেছিল এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের এদিন সকালে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী ডাঃ শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায় ও বিশিষ্ট নৃত্য বিশারদ তথা নৃত্যগুরু নরেশকুমার। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী সলিলচন্দ্রের সুযোগ্যা শিষ্যা কুমকুম ভট্টাচার্য্য, বাণী চ্যাটার্জী ও অনিতা সরকার; সলিলচন্দ্রের সুযোগ্য শিষ্য প্রিয়ব্রত নন্দ, সলিলচন্দ্র ঘোষ শতবর্ষ উদযাপন কমিটির সহ সভাপতি ডাঃ দীপ্তেন চট্টোপাধ্যায়, কানু চৌধুরী ও সলিলচন্দ্র ঘোষ শতবর্ষ উদযাপন কমিটির সভাপতি ফরাসী সাহিত্যের বিশেষ ব্যক্তিত্ব সলিলচন্দ্র ঘোষের ভাতুষ্পুত্রী বাসবী পাল, সুরেন্দ্রনাথ বিদ্যানিকেতনের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ও সাপ্তাহিক সত্যলোক পত্রিকার সম্পাদক কৃষ্ণচন্দ্র ভড় এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব তথা বৈদ্যবাটি-শেওড়াফুলি অঞ্চলের সংস্কৃতির বিকাশে যাঁর অবদান এই মূহুর্তে অপরিসীম সেই নরেন চট্টোপাধ্যায়।
সমবেত অতিথি বৃন্দকে পুষ্পস্তবক, স্মারক ও উত্তরীয় দিয়ে বরণ করে নেন সলিলচন্দ্রের পুত্র আশিস্ ঘোষ। স্বাগত ভাষণে সভাপতি বাসবী পাল সলিলচন্দ্র ও শেওড়াফুলি রাজবাড়ির সাংস্কৃতিক ইতিহাস তুলে ধরেন। নরেন চট্টোপাধ্যায় সলিলচন্দ্রের সঙ্গে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্থিরচিত্রটিকে বৈদ্যবাটি উত্সব ও মেলা কমিটির শান্তিনিকেতনের স্থায়ী রবীন্দ্র প্রদর্শনী কেন্দ্রে রাখার আন্তরিক ইচ্ছা প্রকাশ করেন। রবিবারের সকালের এই মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন অনিতা সরকার, রাখী সেন। এছাড়াও পরিবেশিত হয় ব্রততী মজুমদারের পরিচালনায় সপ্তক সংস্থার সমবেত সঙ্গীত ও অনুরাগ এবং একগুচ্ছ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’র সমবেত সঙ্গীত। সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সলিলচন্দ্র ঘোষের পুত্র আশিস্ ঘোষ, তিনি জানান সলিলচন্দ্র ঘোষের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক বছর ধরে বিভিন্ন জায়গায় প্রতি মাসে একটি করে অনুষ্ঠান করা হবে।