সুমিত দাঁ: সময় কার জন্য থেমে থাকে না। সে চলে তার নিজের গতিতে। নিজের নিয়মে। ঠিক মানব জীবনেও তার বাতিক্রম হয় না। তবুও আমাদের মানব জীবনের চলার পথে আমরা এমন কিছু কিছু মানুষকে আমাদের সমাজে পাই, যাঁরা সত্যিই আমাদের প্রনম্য, আমাদের ঘূনধরা সমাজকে সুস্থ করে তুলতেই এই ধরায় যেন আগমন ঘটে তাঁদের। এমনিই এক মানুষ আমাদের সবার প্রিয় শ্রী অমিয় কুমার মুখোপাধ্যায় (থাকো দা)। সাংবাদিক হিসাবে তিনি যেমন নিজের যোগ্যতার পরিচয় রাখতে পেরেছিলেন, তেমনি একজন সফল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবেও তিনি ছিলেন সফল। সাহিত্যের দুনিয়ায় অবাধ গতিবিধির এই মানুষটি সহসাই যেন আমাদের সকলকে ফাঁকি দিয়ে অমৃতলোকে যাত্রা করলেন, রেখে গেলেন তাঁর সৃষ্টি, তাঁর স্মৃতি আমাদের মননে। গত ২০অক্টোবর,২০২০ হুগলি জেলার সাহিত্য, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক মহলের সকলকে হতবাক করে পার্থিব শরীর ছেড়ে অমৃতলোকের পথে পাড়ি দিলেন। তাঁর এই মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে চারিদিকে শোকের ছায়া নেমে আসে। হুগলি জেলা তথা পশ্চিমবাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানা মানুষজন তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকবার্তা পাঠান। আমরা এলাকাস্থিত মানুষেরা যাঁরা ওনার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিলাম নানা কাজে, নানা সময়ে, কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না তাঁর এই চলে যাওয়া। মানুষ হিসেবে তিনি শুধু সমাজসেবী ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন অকৃতদার, সাহিত্যপ্রেমী, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক মহলের এক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব। ডাঃ বিভূতিভূষন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিষ্ঠিত “কেয়া” পত্রিকার সম্পাদনা করে এসেছেন জীবনের শেষদিন অবধি। তিনি জাতীয় কংগ্রেসের একজন একনিষ্ট কর্মীই ছিলেন না প্রশাসনিক স্তরে বৈদ্যবাটি পৌরসভার পৌরপ্রধান পদে বহুবার নির্বাচিত হন। কাউন্সিলার পদেও আমৃতু কাজ করে গেছেন। সকলের সুখে-দুঃখে পাশে থাকা সদাহাস্যময় এই মানুষটিকে আমরা কখনোই ভুলতে পারব না। উনি আমাদের স্মৃতিতে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন ঠিকই কিন্তু অজশ্র অসহায় দুঃস্থ মানুষগুলির একটাই আর্তি ‘এ কোন সকাল রাতের চেয়েও অন্ধকার’।