বিধবা ভাতার টাকা না দিতে চাওয়ায় বৃদ্ধা মাকে প্রহার ছেলে ও বৌমার

basirসৌমাভ মণ্ডল, উত্তর ২৪ পরগণা: বসিরহাট মহকুমার মাটিয়া থানার ধান‍্যকুড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নেহালপুর আমতলার ঘটনা। ৭৫ ঊর্ধ্ব বৃদ্ধা অনুমতি রায়, গত ৩০ বছর আগে স্বামী বিপিন বিহারী রায় মারা গিয়েছেন। তার পাঁচ মেয়ে ও দুই ছেলে। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছোট ছেলে বিধান চন্দ্র রায় ও বৌমা অনিমা রায় গত পাঁচ বছর ধরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাত বৃদ্ধা মায়ের ওপর। শারীরিক ক্ষমতা হারিয়েছেন, গায়ের চামড়া গুটিয়ে গেছে, চোখে ঠিকমতো দেখতে পান না, সংসারের কাজ করতে পারেনা, অক্ষমতা গ্রাস করেছে। জীবনের শেষ সম্বলটুকু হলো রাজ্য সরকারের মাসিক ১০০০ টাকা বিধবা ভাতা। তার ওপরেই নজর ছেলে-বৌমার। সেটাই হাতাতে গত তিন মাস ধরে ছোট ছেলে ও বৌমা বিভিন্ন সময় অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ, মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালাত বলে অভিযোগ। এদিন সকালে বৃদ্ধার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বিধবা ভাতা টাকা ঢুকলে সেই টাকা তিনি ছোট বৌমার কাছে চাইতে যান। কিন্তু তারা সেই টাকা হাতাতে চেষ্টা করে। বৃদ্ধা প্রতিবাদ করলে তাকে চড়, লাথি ও ঘুষি মারতে শুরু করে ছোট ছেলে বিধান। অনিমা তার শ্বাশুড়ির হাত-পা ধরে রেখে বেধড়ক মারধর করে। এই ঘটনা জানাজানি হতেই পাশের ঘর থেকে নাতি সঞ্জয় রায় ছুটে কোনরকম ভাবে কাকা কাকিমার মারধরের হাত থেকে ঠাকুমাকে রক্ষা করে বসিরহাট উত্তর বিধানসভার প্রাক্তন বিধায়ক এটিএম আব্দুল্লাহ্ ও ধান‍্যকুড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মিহির ঘোষের সহযোগিতায় ধান্যকুড়িয়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করে।  বৃদ্ধার অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই ঘটনার জেরে গ্রামের মানুষ ক্ষোভে ফুঁসছে। বসিরহাট উত্তর বিধানসভার তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান তথা বসিরহাটের রুগি কল‍্যাণ সমিতির সভাপতি এটিএম আব্দুল্লাহ্ রনি জানান, “এইভাবে এক অসহায় বৃদ্ধার বিধবা ভাতার টাকা হাতানো ও তাকে মারধর করা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এটা একবিংশ শতাব্দীর অমানবিক ঘটনা। আমরা ছোট ছেলে বিধান চন্দ্র রায় ও বৌমা অনিমা রায়ের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।” ছেলে ও বৌমার বিরুদ্ধে মাটিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

error: Content is protected !!

Discover more from Sambad Pratikhan

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading