চলছে ভালোবাসার সপ্তাহ, ইতিমধ্যেই আমরা পালন করেছি ‘রোজ ডে’ বা ‘গোলাপ দিবস’। কেন এই দিবস পালন, লিখছেন আত্রেয়ী দো
শুরু হয়ে গেছে ‘ভালোবাসার সপ্তাহ’ (ভ্যালেন্টাইন’স উইক)। ৭-১৪ ই ফেব্রুয়ারি অবধি সারা সপ্তাহজুড়ে চলবে প্রেমিক যুগলের আবেগ ও ভালোবাসা প্রকাশের নানান উপস্থাপনা। এই সপ্তাহের প্রতিটি দিনের আলাদা আলাদা নাম ও তাৎপর্য রয়েছে। ‘রোজ ডে’ বা ‘গোলাপ দিবস’ দিয়ে সূচনা হয় ভালোবাসা উদযাপনের এই সপ্তাহের।
প্রতিবছর ৭ই ফেব্রুয়ারি দিনটি ‘রোজ ডে’ হিসেবে পালন করা হয়। এই বিশেষ দিনটি ভালোবাসার মানুষকে গোলাপ উপহার দিয়ে নিজের অনুভূতি প্রকাশের দিন। শুধু যে স্বামী-স্ত্রী, প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে দিনটি সীমাবদ্ধ থাকে তা নয়, বা-মা, বন্ধু অর্থাৎ কাছের যে কোনো মানুষকেই নিজের অনুভূতি প্রকাশের দিন। এছাড়াও, নিজেই নিজেকে ভালোবেসে উপহার দিতে পারেন সুন্দর একগুচ্ছ গোলাপ। কিন্তু ফুল মাত্রেই একটি স্নিগ্ধ উপহার,তাহলে শুধু গোলাপ দিয়েই কেন ভালোবাসার উদযাপন করা হয় ?
ইতিহাস
কীভাবে প্রচলিত হল দিনটি?কেন ই বা বিশেষ ফুলটিই হয়ে উঠল প্রেমের প্রতীক? জানতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে গ্রিক এবং রোমান সভ্যতায়। রোমানদের পৌরাণিক কাহিনী থেকে জানা যায়, গোলাপ ফুল ছিল রহস্য এবং আবেগের প্রতীক। গ্রিকদের প্রেমের দেবী হলেন ‘আফ্রোদিতে’ এবং রোমানদের প্রেম ও সৌন্দর্য্যের দেবী হলেন ‘ভেনাস’ বা ‘শুক্র’। এই দুই দেবীর সঙ্গেই গোলাপফুল সম্পর্কিত। পরবর্তীকালে খ্রিস্টীয় দর্শনেও লাল গোলাপের নাম উঠে আসে। গোলাপফুল হয়ে ওঠেছিল ভার্জিন মেরি-র প্রতীক। সুমিষ্ট গন্ধ , আকর্ষণীয় রঙের কারণে গোলাপ প্রাচীন সভ্যতার ইতিহাসে হয়ে উঠেছিল ‘প্রেমের প্রতীক’। মনে করা হয়, ভিক্টোরিয়ানরাই প্রথম গোলাপফুলকে ভালোবাসা প্রদর্শনের নিদর্শন হিসেবে ব্যবহার করেন। তারাই প্রথম একে অপরকে গোলাপফুল উপহার দেওয়ার মাধ্যমে ভালোবাসা প্রকাশ করে। সেই সময় থেকেই এই রীতি প্রচলিত।এই গোলাপফুল উপস্থাপনার মাধ্যমে ভালোবাসা প্রদর্শনের রীতিকে মাথায় রেখে, ৭ই ফেব্রুয়ারি দিনটিকে “গোলাপ দিবস”হিসেবে পালন করা হয়।
তাৎপর্য
যদিও লাল গোলাপ ভালোবাসা দিবসের জন্য সর্বাধিক পছন্দ, কিন্তু গোলাপ ছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির ফুল রয়েছে যা আমরা আমাদের প্রিয়জনকে উপহার হিসেবে দিতে পারি। তাছাড়া,গোলাপেরও রঙের অনেক বৈচিত্র্যতা রয়েছে এবং সেই সাথে রয়েছে প্রত্যেকটি বর্ণের গোলাপের আলাদা আলাদা তাৎপর্য। যেমন – সাদা গোলাপ নির্দোষ এবং বিশুদ্ধতার প্রতীক, হলুদ গোলাপ বন্ধুত্ব এবং নতুন শুরুর প্রতীক। অন্যদিকে, কমলা গোলাপ আকাঙ্ক্ষা নির্দেশ করতে ব্যবহৃত হয়, গোলাপী গোলাপ কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জানাতে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও রয়েছে নীল গোলাপ যা রহস্য বা অসাধ্য সাধনের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপিত হয়। এছাড়া রয়েছে কালো গোলাপ যা মৃত্যু বা শোকের প্রতীক, তাই উপহার হিসেবে এর ব্যবহার হয় না।
এটা ঠিক যে, নিজেদের অনুভূতি, ভালবাসা প্রকাশের জন্য না কোনো নির্দিষ্ট দিন থাকে আর না কোনো উপহার উপস্থাপনার প্রয়োজন হয়। তবুও, এই একটা দিনকে উপলক্ষ করে, কাছের মানুষকে উপহার দিয়েই ফেলুন একগুচ্ছ গোলাপ। প্রতিদিনের একঘেয়ে গড়পরতা জীবনে একটা দিন না হয় থাকুক ভালোবাসা উদযাপনের জন্য।