এলাকা ঢেকে যাচ্ছে দূষিত ধোঁয়ায়, কিন্তু কোনরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ না করে মৌনী নিয়েছে ডানকুনি পৌরসভা ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ

dankuni-waste-fire.-2নিজস্ব সংবাদদাতা: হুগলি জেলার অন্যতম শিল্পাঞ্চল হিসাবে ইতিমধ্যেই নিজের জায়গা করে নিয়েছে ডানকুনি। মূলতঃ ডানকুনি এলাকার পুরাতন দিল্লি রোড ও দূর্গাপূর এক্সপ্রেসওয়ে সন্নিহিত এলাকা জুড়ে এবং ডানকুনি এলাকার বিভিন্ন প্রান্ত জুড়ে তৈরি হয়েছে নানা শিল্প-কারখানা। এর সঙ্গে সঙ্গে ডানকুনিবাসী যে জিনিষ বিনামূল্যে উপভোগ করছে সেটি দূষণ। এই এলাকার এই সকল কল-কারখানা তাদের বর্জ্য রাতের অন্ধকারে পুড়িয়ে রীতিমত দূষণের মাত্র বাড়িয়েই চলেছে ডানকুনি এলাকায়। এর সঙ্গে সঙ্গে যে বিষয়টি এই এলাকার মানুষের জন্য ভয়ংকর হয়ে উঠছে সেটি হল ডানকুনি চৌমাথা থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে ডানকুনি এক্সপ্রেসওয়ের ধারে ফুড কর্পোরেশনের গোডাউন সংলগ্ন এলাকার রাস্তার ওপর স্তুপাকারে জমা করা হচ্ছে সকল রকম বর্জ্য, যার মধ্যে অধিক মাত্রায় থাকছে এই সকল কারখানা ও অন্যান্য দোকানের পরিত্যক্ত প্লাস্টিক, রাবার ইত্যাদি। আর এই ময়লার স্তুপে আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে এই সকল বর্জ্য পদার্থ। ফলস্বরূপ এই এলাকা অধিকাংশ সময়ে ঢেকে থাকছে দূষিত ধোঁয়ায়, এবং ডানকুনি এক্সপ্রেসওয়ের ধারের এই রাস্তা এখন চলাচলের অযোগ্য বললে কিছু কম বলা হয়। এছাড়াও এই পথের পাশে বন দপ্তরের লাগানো সবুজ আজ পুরোপুরিই ধ্বংস। স্থানীয় জনগণর জানান এই এলাকায় যে গাছগুলি ছিল সেই গাছ গুলিতে রীতিমত নম্বর লাগানো ছিল যেগুলির আজ আর কোনও অস্তিত্বই নেই। এক কথায় নরকে পরিণত হয়েছে এই এলাকা।

এই বিষয় সম্পর্কে অনেকদিন ধরেই স্থানীয় ডানকুনি পৌরসভা, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, স্থানীয় থানা সহ বিভিন্ন সরকারী দপ্তরে আবেদন জানিয়েও কোন রকম সদুত্তর পান নি এই এলাকার স্বেচ্ছাসের্বী সংস্থা সেভ ট্রি-সেভ ওয়ার্ল্ড নামক এক সংস্থা বলে জানান সংস্থার সদস্যরা। এই বিষয়ে ডানকুনি পৌরসভার বর্তমান প্রশাসক ও প্রাক্তন পৌর-প্রধান হসিনা শবনমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ডানকুনি পৌরসভার ময়লা ফেলার জন্য নিজস্ব ডাম্পিং এর জায়গা নির্ধারিত করা হয়েছে। ফুড কর্পোরেশন গোডাউন সংলগ্ন ও একটি বহুজাতিক সংস্থার বাণিজ্যিক শাখা সন্নিহিত এলাকার রাস্তার ওপর যে ময়লা ও বর্জ্য জমা করে রাতের অন্ধকারে আগুন জ্বালিয়ে পরিবেশকে রীতিমত দূষিত করা তোলা হচ্ছে সেই বিষয়ে তিনি বলেন, কেউ বা কারা লুকিয়ে ওই এলাকায় ময়লা ও বর্জ্য ফেলে আসছে ও আগুন জ্বালিয়ে তা ধ্বংস করার চেষ্টাও করছে। এর ফলে যে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে সেই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ডানকুনি পৌরসভার বর্তমান প্রশাসক হসিনা শবনম জানান, তাঁরা এই বিষয়টিতে অবিলম্বে আশু ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

এখন যে প্রশ্নটি উঠে আসে পৌরসভার নাকের কাছে কী করে এইভাবে ময়লা ফেলে ও তা জ্বালিয়ে এলাকার পরিবেশ দূষিত করা হচ্ছে এবং ঠিক কি কারণে পৌরসভা ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ মৌনীব্রত অবলম্বন করে চলছেন সেটা, যদিও অকুস্থল থেকে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অফিস একদম কাছেই। সবথেকে বড় কথা এইভাবে ময়লা ও বর্জ্য আগুন জ্বালিয়ে ধ্বংস করার ফলে যে কোন সময়ে বড় ধরনের কোনও রকম অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটাও অসম্ভব নয়। কয়েকদিন আগেই এই এলাকার চাকুন্দিতে একটি প্লাস্টিক কারখানার ময়লা ও বর্জ্য জ্বালিয়ে ধ্বংস করতে গিয়ে ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কিন্তু কোনও রকম ভাবেই বা কেনই বা টনক নড়ছে না স্থানীয় প্রশাসনের নাকি এর পেছনে কাজ করছে কোনও এক অজ্ঞাত কারন যার বলি হচ্ছে এই এলাকার সাধারণ মানু, ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এই এলাকার আগামীর ভবিষ্যত্‍।

error: Content is protected !!

Discover more from Sambad Pratikhan

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading