শুভদীপ দে, হুগলি: মাঝে আর মাত্র একটি দিন, এরপরই অনুষ্ঠিত হবে ঐতিহাসিক মহেশের রথযাত্রা। ঠিক তার দুদিন আগে অর্থাৎ রবিবার প্রভু জগন্নাথ দেবের নবযৌবন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হলো। করোনার আবহেই লোকচক্ষুর আড়ালে এই নবজৌবন উত্সব পালিত হলো। বিশ্বজুড়ে করোনার মহামারীতে যখন সমস্ত কিছু থমকে গেছে তখন বাদ পরেনি মন্দির গুলিও, স্যোশাল ডিস্টেন্সিং মানতে গিয়ে এর প্রভাব পড়েছে দেবালয় গুলিতেও। করোনাকে সঙ্গী করেই বর্তমানে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে পৃথিবী। এক এক করে বিভিন্ন নিয়মের মধ্যে খুলতে শুরু হয়েছে মন্দিরগুলি। তাই এবারে জগন্নাথদেবও ভক্তদেবের দর্শন দেবেন বিভিন্ন নিয়মের মধ্যে। আষাঢ় মাস মানেই জগন্নাথ দেবের মাস, তাই এই মাস জুড়ে প্রভুর বিভিন্ন পূজার্চনা রীতিনিতি মেনে পালন করা হয়। আর জগন্নাথের এই অনুষ্ঠান চাক্ষুষ করতে বহু ভক্তের সমাগম হয় হুগলি জেলার শ্রীরামপুর মাহেশের জগন্নাথ মন্দিরে। করোনার আবহের মধ্যে যাতে এই সব অনুষ্ঠানগুলোতে অতিরিক্ত জনসমাগম না হয় তার জন্য আগাম সতর্ক প্রশাসন। প্রভুর স্নানযাত্রা, নবজৌবন ও রথযাত্রায় ভিড় না যাতে না হয় তার জন্য বারে বারে মন্দির কতৃপক্ষের সাথে বৈঠক করেন জেলা প্রশাসন। সিদ্ধান্ত হয় যে নানা নিয়ম পালনে ২৫ জনের বেশি মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবে না। সেই মতো মঙ্গলবারের নবজৌবন উত্সব পালিত হলো প্রশাসনের নির্দেশে সামাজিক দূরত্ব মেনে। মন্দির কর্তৃপক্ষ গত একমাস আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবারে স্নানযাত্রা উৎসব মন্দির প্রাঙ্গণে হবে। সেই মতো গত ১৫ দিন আগে সামাজিক দূরত্ব মেনেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল জগন্নাথের স্নানযাত্রা। এরপরই ১৫ দিন বন্ধ ছিল জগন্নাথ মন্দির। রবিবার জগন্নাথ সেজে উঠেছেন নব যৌবনে। টানা ১৫ দিন পর ভক্তদের সামনে আসেন প্রভু। মঙ্গলবার সকাল থেকেই চলছে পূজার্চনা। মনস্কামনা পূরণের জন্য প্রভুর কাছে প্রার্থনা করেন ভক্তরা। সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব মেনে এক এক করে জগন্নাথ দর্শন করেছেন ভক্তরা। এ বিষয়ে মন্দিরের প্রধান সেবাইত সৌমেন অধিকারী জানান ৬২৪ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম বার মহেশের রথের চাকা স্তব্ধ হয়ে গেল, আমরা প্রশাসনের নির্দেশ মেনে মন্দিরে পূজানুষ্ঠান স্নানযাত্রা পালন করতেছি এবং রথযাত্রাও মন্দির প্রাঙ্গণে করা হবে। দেশের বৃহত্তম রথযাত্রা পুরীর রথযাত্রা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে স্থগিত হয়ে গেছে। তার সঙ্গে সঙ্গে ভারতবর্ষের দ্বিতীয় বৃহত্তম রথ য়াত্রা এবছর মাহেশের রথের চাকা রাজপথে চলবে না।তাই মন খারাপ ভক্তদের।