তিন মাস বন্ধ থাকার পর অবশেষে চালু হলো দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর

1e80932c-f601-4fc7-b2c8-cc1সৌমাভ মণ্ডল, বসিরহাট: দীর্ঘ ৮৮ দিন বন্ধ থাকার পর শনিবার থেকে পুরোদমে চালু হলো বসিরহাটের ঘোজাডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সীমান্ত বাণিজ্য। গত ২৩শে মার্চের পর থেকে লকডাউন এবং করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর ঘোজাডাঙ্গা সহ সব বন্দরে বাণিজ্য বন্ধ ছিল। বিগত কয়েক দিন ধরে জেলা ও নবান্নের প্রশাসনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে কয়েকটি বিধিনিষেধ মেনে সীমান্ত বাণিজ্য চালু করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে উত্তর ২৪ পরগণার জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী বাণিজ্য শুরুর অনুমতি দিয়ে ঘোজাডাঙ্গা স্থল বন্দরে চিঠি দিয়েছেন। এরপরেই শনিবার কেন্দ্রীয় শুল্ক দফতরের অনুমতির ভিত্তিতে চালু হয়েছে সীমান্ত বাণিজ্য। ঘোজাডাঙ্গা সি অ্যান্ড এফ সূত্রের খবর, প্রথম দিন ২৫টি ট্রাক পণ্য নিয়ে ওপারে যাবে। জানা গেছে, ২৫শে জুনের মধ্যে সীমান্তে পণ্য নিয়ে দীর্ঘ দুই মাসের বেশি সময় দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকগুলির পণ্য বাংলাদেশে পাঠাতে হবে। সতর্কতা হিসেবে প্রত্যেক লরি চালককে পিপিই কিট পরতে হবে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ২০০ মিটার পর্যন্ত ট্রাকগুলি যাবে। পণ্য খালাসের পরই সেগুলিকে ফিরিয়ে আনা হবে। এজন্য ৭০ জন চালকের একটি পুল করতে বলা হয়েছে। তারাই জিরো পয়েন্ট থেকে ট্রাক নিয়ে বাংলাদেশে যাবেন ও ট্রাক নিয়ে ফেরত আসবেন। তারা কোনও বাইরের লোকের সংস্পর্শে আসতে পারবেন না। প্রতিটি ট্রাককে স্যানিটাইজ করেই ভারতের ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। 3659bc67-1e44-4ae2-a7c9-893ভারত বাংলাদেশের মধ্যে ৮টি স্থল বন্দর দিয়ে সীমান্ত বাণিজ্য হয়। তার মধ‍্যে ৭টি বন্দর আগে চালু হলেও ঘোজাডাঙ্গা সীমান্ত খোলা নিয়ে সমস্যা জট পাকাচ্ছিল। রপ্তানীকারকদের সংগঠন ঘোজাডাঙ্গা সি অ্যান্ড এফ অ্যাসোসিয়েশন জেলাশাসক সহ নবান্নকে লেখা এক চিঠিতে স্থল বন্দর দিয়ে অবিলম্বে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চালুর ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করেছিল। রপ্তানীকারকরা চিঠিতে তাদের দুর্দশার কথা জানিয়ে বলেছিলেন, পণ্য ঠিকমত সরবরাহ করতে না পারার জন্য বাংলাদেশের আমদানীকারকরা অর্ডার বাতিল করে দিচ্ছিলেন। যার জেরে তাদের সমূহ সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছিল। শুল্ক দফতর সূত্রে খবর, ঘোজাডাঙ্গাতে পণ্য রপ্তানীর অপেক্ষায় রয়েছে প্রায় আড়াই হাজার ট্রাক। পেট্রাপোলের প‍র ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সীমান্ত বাণিজ্য হয় ঘোজাডাঙ্গা দিয়েই। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রকের হিসাব অনুযায়ী, প্রতি বছর ১৬ হাজার কোটি টাকার আমদানি-রফতানি হয় ঘোজাডাঙ্গা স্থলবন্দরের মাধ্যমে। সরাসরি প্রায় ৫ হাজার মানুষ প্রত‍্যক্ষ ভাবে এবং পরোক্ষ ভাবে সব মিলিয়ে লক্ষাধিক মানুষ নির্ভরশীল এই স্থলবন্দরের উপর। তাই এই বন্দর চালু হওয়ায় খুশির হাওয়া বাণিজ্য মহলে।

error: Content is protected !!

Discover more from Sambad Pratikhan

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading