Site icon Sambad Pratikhan

প্রেমিক যুগলের প্রেম কান্ডতে উত্তপ্ত ত্রিপুরা

Advertisements

পানি সাগর প্রতিনিধি, ত্রিপুরা:  প্রেমিক যুগলের প্রেম কান্ডতে এখনো উত্তপ্ত উত্তরের হরুয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা । বাঙালি ও মনিপুরী সমাজের মধ্যে বিভেদ। চাপে পড়ে মামলা নিল কদমতলা থানার পুলিশ। স্থানীয় নেতৃত্বেদের মাধ্যমে পঞ্চায়েত স্তরে মীমাংসার চেষ্টা হয়েছিল ঘটনাটি। প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জন দুষ্কৃতী আচমকা বাড়িতে প্রবেশ করে অপহরণ করে নিয়ে যায় এক নববধূকে। ঘটনা উত্তরের কদমতলা থানার উত্তর হুরুয়া এলাকায়। ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, উত্তর জেলার কদমতলা থানার উত্তর হুরুয়ার বাসিন্দা বিরেন্দ্র মালাকারের ছেলে বিক্রম মালাকারের সাথে পাশের গ্রাম অর্থাৎ ধর্মনগর থানার পশ্চিম হুরুয়ার একটি মনিপুরি সম্প্রদায়ের মেয়ের মধ্যে প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল দীর্ঘদিনের। বিগত ৭ নভেম্বর অর্থাৎ বৃহস্পতিবার তারা পালিয়ে উপ্তাখালি গ্রামের একটি মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করে। এতে মেয়েটির পরিবার থেকে থানায় অভিযোগ করা হলে পানিসাগর থানার পুলিশ নব বিবাহিত দম্পতিকে উপ্তাখালি এলাকা থেকে উদ্ধার করে পানিসাগর থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ নববধূকে জিজ্ঞেস করলে সে জানায় সে স্ব-ইচ্ছায় বিক্রমকে বিয়ে করেছে। এমন কি পানিসাগর থানায় একটি লিখিত দিয়ে আসে নববধূ। এতে পুলিশ বিবাহিত দম্পতিদের প্রাপ্ত বয়সের কারনে থানা থেকে ছেড়ে দেয়। বিক্রম পানিসাগর থেকে স্ত্রীকে নিয়ে উত্তর হুরুয়া নিজ বাড়িতে উঠে।

এদিকে গত সোমবার বিকেলে আচমকা  নব বধূর বাপের বাড়ির পক্ষ থেকে ৪০-৫০ জন দুষ্কৃতি বিক্রম মালাকারের বাড়িতে এসে আক্রমণ চালায় বলে অভিযোগ। দীর্ঘ সময় তান্ডব চালিয়ে ছেলের বাড়ির আসবাপত্র ভাঙ্গচুর করে ও ছেলের মা বাবাকে মারধর করে মেয়েকে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন গ্রামবাসী ও বিক্রম মালাকারের পরিবার। এতে গোটা উত্তর হুরুয়া এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পরে। বিক্রম মালাকারের পক্ষ থেকে এই আক্রমণের প্রতিবাদ জানিয়ে নারায়ণ সিনহা, কবিতা সিনহার বিরুদ্ধে কদমতলা থানায় একটি মামলার আবেদন করা হয়। পরে সম্পূর্ণ বিষয়টি নিয়ে বিশ্ব হিন্দু সেনা ও এলাকাবাসী জড়ো হয়ে কদমতলা থানার ওসি কৃষ্ণধন সরকারের নিকট একটি ডেপুটেশন দেন।  সম্পূর্ণ বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় কদমতলা থানার ওসি কৃষ্ণধন সরকারের  উত্তেজনা যাতে ভয়ঙ্কর রূপ না নেয় তারজন্য প্রশাসনের নিকট আবেদনও করা হয়।

কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারণে কদমতলা থানার পুলিশ বিষয়টিতে অনীহা দেখায়। জানা গেছে কদমতলা থানার পুলিশ পঞ্চায়েত স্তরে ঘটনাটি মীমাংসা করতে চাইলেও মেয়ের পক্ষ মানতে নারাজ। অবশেষে উত্তর হুরুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, বাগবাসা মণ্ডল কমিটির মন্ডল সভাপতি সুদীপ দেব, জেলা পরিষদের সদস্য কাজল দাস ও হিন্দু সেনার প্রদেশ সভাপতি অভিনাশ কৃষ্ণ দাস সহ গোটা এলাকাবাসী বৃহস্পতিবার রাতে কদমতলা থানায় আসেন। কেন মামলা লিপিবদ্ধ করা হলো না জানতে চান তারা।

পরবর্তীতে কদমতলা থানার পুলিশ এলাকাবাসীর চাপে পড়ে মামলা নিতে বাধ্য হয়। এ বিষয়ে উত্তর জেলার পুলিশ সুপারের কাছে একটি প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন অভিযোগকারীরা। তবে বাগবাসা মন্ডল সভাপতি সুদীপ দেব ও জেলা পরিষদের সদস্য কাজল দাস এই বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। আর মন্ডল সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্যের এরকম আচরণে স্থানীয় উত্তর হুরুয়াবাসীর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

পাশাপাশি উত্তর হুরুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুক্তা দাস ও হিন্দু সেনার প্রদেশ সভাপতি অভিনাশ কৃষ্ণ দাসের বক্তব্য আইন আইনের পথে চলবে। এভাবে একটি মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হলো অথচ পুলিশ প্রথমে মামলা নিতে অনীহা মনোভাব দেখালো। এখন দেখার বিষয় কদমতলা থানার পুলিশ ঘটনাটি এড়িয়ে যায় নাকি সুষ্ঠু তদন্ত করে এই অপেক্ষায় হুড়ুয়া গ্রামবাসী।

Exit mobile version