১৯৬৬’র ব্যবহারিক ধারাপাতে সমগ্র ভারত যখন অস্তিত্ব রক্ষার্থে নিতান্তই অঙ্গীকারবদ্ধ, ঠিক সেই চাঞ্চল্যকর বাতাবরণে “রাজকুমারীর” কেন্দ্রস্থলে অলীক দৃষ্টির স্পন্দনে হাত মিলিয়েছিলে তোমরা কজন। বিদ্যালয়েরশ্রেণী শ্রেণীকক্ষ থেকে সবুজ বনানীতে আবৃত সেই নির্ভেজাল পরিবেশ ও ছটি ঋতুর বৈচিত্রে তোমাদের প্রাত্যহিক জীবনটি ছিল লণ্ডনের প্রখ্যাত টেমস নদীর ঢেউ এর মত, যেখানে ছিল না কোনও প্রতিহিংস, ছিল না কোনও প্রতিযোগিতার টানাপোড়েন। কিন্তু সুদূর রঙিন আবেগে রুক্মিণী, দেবযানী, মৈত্রেয়ী, মিত্রা, শ্বেতা, দুজন সুজাতা, অনুরাধা, তনুজা, কাবেরী, কৃষ্ণা এবং তুমি অর্থাত্ রুমকি (রাজকুমারীর মাসীদের নাম) ছিলে অপরাজেয় রাজকুমারীর সৃষ্টিশীল আবিষ্কার। প্রসঙ্গত বলা যায়, শিক্ষাজীবনের প্রথম দিন থেকেই যেন ছিল প্রতিষ্ঠালাভের এক অভাবনীয় উদ্যোগ ও দায়িত্বশীল হয়ে ওঠার এক দৃষ্টান্তমূলক প্রতিচ্ছবি। বেশ কিছু মাইল অতিক্রম করে একসঙ্গে দলবদ্ধ হয়ে বিদ্যালয় অভিমুখে হেঁটে যাওয়া, আর তারই সঙ্গে চলত একে অপরকে নতুন করে উদ্বাবন করার এক অত্যাশ্চর্য প্রয়াস। যা বর্তমান তোমাদের প্রতিজনের সামাজিক পটভূমিতে শুধু প্রতিষ্ঠাকেই বহন করে আনেনি, তোমাদের হৃদয়ের সুপ্ত প্রেমে এনেছে এক মনোরম ঝংকার আর প্রতিকুলতায় ভরা জীবনশৈলীতে নিশ্চিত করেছে অমোঘ নবজাগরণ। স্বভাবতই ক্লাশরুমে একসঙ্গে বসতে বসতে, আর একে অপরের অবচেতন মনকে বন্ধুত্বের অবরণে মাতিয়ে কী করে ১৯৬৬ থেকে ১৯৭৩ অতিবাহিত হল, তা শুধুমাত্র অদূর ইতিহাসের এক ঐতিহ্যবাহী প্রেক্ষাপট। বিজ্ঞান ও কলা বিভাগের সমন্বয়ে তোমরা ছিলে রাজকুমারীর অলংকৃত গহনা। ক্লাশরুমে পড়াশুনো থেকে শুরু করে যে কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ এবং আত্মপ্রতিভার বিকাশ সবকিছুতেই ছিল অভূতপূর্ব প্রচেষ্ঠা আর সামাজিক অনুরণনে সুর মিলিয়ে সফল ঐকান্তিক উচ্চতাকে নিশ্চিত করার যৌথ আঙ্গিক। আনন্দের সাজানো বাগানে দুঃখ ও অভিমান সঙ্গে পরাজয় ক্ষণিকের বাধার অভিপ্রায় হলেও তোমাদের মধ্যে ছিল অকল্পনীয় মনের পরিতৃপ্তি এবং অপরূপ ব্যবহারিক গ্রহণযোগ্যতা। সেই কারণে মৈত্রেয়ীর সঙ্গে যখন ছিল সুজাতা যুগল, সেই সমীকরণে মিলেছিল দেবযানী, মিত্রা ও শ্বেতা, অপরাজিতা। অন্যদিকে তারই আবেগময়তায় ঘটলো তনুজার সমাবেশ। সঙ্গে সঙ্গে কৃষ্ণা ও কাবেরীর স্রোতের গাঢ়ত্বে তৃপ্ত হল রুক্মিণীর বিরামহীন অবস্থান। এখজনেই শেষ নয়। দৃপ্ত তৃপ্তির আঙিনায় অনুরাধা যখন অম্লান হৃদয়ের কেন্দ্রস্থলে, হয়ত সেখানেই রুমকীর মিষ্টি কণ্ঠস্বরে ধ্বনিত হল,”তোমাদের আসরেতে এইতো প্রথম গাইতে আসা”- যেন মনে হয়