ইতিহাস প্রসিদ্ধ এই রথযাত্রায় উপস্থিত হয়ে আপ্লুত মুখ্যমন্ত্রী মাহেশকে কেন্দ্র করে পর্যটন কেন্দ্রের ও এই মন্দির এলাকা সংলগ্ন এলাকায় যাত্রীনিবাস তৈরি করার কথা ঘোষণা করেন। এদিন এই উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শ্রীরামপুর লোকসভার সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল, বিধায়ক সুদীপ্ত রায়, বিধায়ক স্নেহাশীষ চক্রবর্তী, বৈদ্যবাটি পৌরসভার পুরপিতা অরিন্দম গুইন, মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরের সেবাইত পিয়াল চক্রবর্তী সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
লক্ষাধিক ভক্তের সমাগমে শুরু হওয়া সুপ্রাচীন, ঐতিহাসিক এই রথযাত্রা উত্সবকে কেন্দ্র করে মাহেশে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় এক মাস ব্যাপী মেলা। ইতিহাস প্রসিদ্ধ এই রথযাত্রা উত্সবের ইতিহাসের দিকে দৃষ্টি দিলে যে বিষয়টি আমাদের সামনে উঠে আসে তা এইরূপ- ধ্রুবানন্দ ব্রহ্মচারী নামে এক বাঙালি সাধু চতুর্দশ শতকে পুরীতে জগন্নাথদেবকে নিজের হাতে ভোগ রেঁধে খাওয়াবেন বলে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুরীর মন্দিরের পূজারীদের বাধায় তিনি তা করতে না পেরে মনের কষ্টে আমরণ অনশনে বসলেন। অনশনের তিন দিন পরে জগন্নাথদেব তাঁকে দেখা দিয়ে ফিরে যাওয়ার আদেশ দেন এবং তিনি বলেন মাহেশে গিয়ে সেখানে তাঁর (জগন্নাথের)মূর্তি গড়ে সেখানে সাধন করতে। এক বর্ষার দিনে একটি নিমকাঠ ভেসে আসে মহেশের গঙ্গার জগন্নাথ ঘাটে, সেই নিমকাঠ থেকেই বানানো জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা’র মূর্তি আজও সমান ভাবে পূজিত হয়ে চলেছে।
মাহেশের বর্তমান রথটি ১৫০ টন ওজনের এবং উচ্চতায় ৫০ ফুট। সবথেকে উলেক্ষ্য এত ভারী এই সুপ্রাচীন রথটি চালানোর জন্য কোনও রকম যন্ত্রের প্রয়োজন পড়ে না। সাধারণ মানুষের টানেই জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা জগন্নাথ বাড়ি থেকে প্রায় ১ কিমি পথ পেরিয়ে তাঁদের মাসির বাড়িতে উপস্থিত হন। আবার আট দিনের মাথায় ঠিক একই ভাবে তাঁরা নিজ গৃহে ফিরে আসেন উল্টোরথের দিনে। (ছবি-দিপান্বীতা দাস, এস.পাল ও স্বরূপম চক্রবর্তী)