Site icon Sambad Pratikhan

ডাক্তার ও ডাক্তার

Advertisements

সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, কলকাতাঃ ভারতীয় গণতন্ত্রে সংবাদমাধ্যমকে গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয়। এবং এই পেশায় অর্থাত্‍ সাংবাদিকতা পেশায় আমরা যাঁরা যুক্ত তারা সদা তত্‍পর সঠিক সংবাদ সঠিক সময়ে জনগণের দরবারে তুলে ধরতে। এই সকল সংবাদ সংগ্রহ করতে আমাদের মনে সাংবাদিকদের নানা প্রতিবন্ধকতার সামনে হাজির হতে হয়,  তবুও আমরা পিছিয়ে আসি না নিজেদের দায়িত্ব পালন করা থেকে। আমরা কিন্তু সকল কাজকর্ম শিকেয় তুলে আওয়াজ তুলি না আমাদের সকল সুবিধা দিতে হবে বা আমাদের প্রকৃত নিরাপত্তা দিতেই হবে রাজ্যের প্রশাসনকে। আসলে যে প্রসঙ্গে এই কথার অবতারণা তার কারণ এখন প্রায় সকলেরই জানা। রাজ্যে ডাক্তারদের কর্মবিরতি আজ ষষ্ঠ দিনে। আন্দোলনকারী ডাক্তারবাবুরা অনড় তাদের আন্দোলনে। নিশ্চয় রাজ্যের সকল ডাক্তারদের সকলরকম নিরাপত্তার দায়িত্ব রাজ্য প্রশাসনের। তার সঙ্গে একটা কথা সাধারণকেও মাথায় রাখতে হবে ডাক্তাররাও আমাদের সমাজের অঙ্গ, কাজেই তাঁদের গায়ে হাত কি না তুললেই নয়। জুনিয়র ডাক্তারদের এই আন্দোলনের ষষ্ঠ দিনে এসেও রাজ্য প্রশাসনের প্রধান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখনো আশাবাদী আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হবে খুব তাড়াতাড়ি। তবে তাঁর এই আলোচনার মধ্য দিয়ে রফা সুত্র নির্ণয় করার ব্যাপারটি কোন এক অজ্ঞাত কারণে ওই সকল আন্দোলনকারীদের দলবল এই বিষয়ে গররাজী। একটি বিষয় এই প্রসঙ্গে আলোকপাত করা বিশেষ জরুরী, রাজ্য প্রশাসনের প্রধান যখন চাইছেন কঠোর কোনও আইন প্রয়োগ করে আলোচনার মধ্য দিয়ে রফাসূত্র বার করতে। তখন কী কারণে বা কেন আন্দোলনকারীরা সেই আহ্বানে সাড়া না দিয়ে কর্মবিরতিকেই বেছে নিচ্ছেন বারে বারে তা নিয়ে আমরা কী একটুও ভাবব না।এর পিছনে কী অন্য কোনও কারণ বা লক্ষ্য বিদ্যমান? আরও একটি বিষয়ে আলোকপাত করা বিশেষ জরুরী, সেটি হোল, আমরা যখন এই আন্দোলনের সংবাদ সংগ্রহ করতে এন.আর.এস হাসপাতাল অথবা ন্যাশানাল মেডিক্যাল কলেজে যাচ্ছি তখন ওই সকল আন্দোলনকারী দলের প্রতিভূ বা নেতৃস্থানীয় কয়েকজন আন্দোলনকারী যে ভাষায় কথা বলছেন বা যে ব্যবহার তাদের কাছ থেকে আমরা পাচ্ছি সেটা কতটা যুক্তিযুক্ত তা কী তারা একবারও ভেবেছেন? বলা ভালো তারা হাসপাতালের ভিতরে বসে একটা আলাদা সমান্তরাল প্রশাসন চালাতে চাইছেন তাদের নিজেদের মত করে। ভাবতে অবাক লাগে এরাই আগামীর ডাক্তার! যাদের কাছে নিজেদের সুখ-স্বাছন্দই প্রধান। তাঁরা একবারও ভাবছেন না তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন শতশত সাধারণ মানুষের দল। ভাবুন তো, কী অন্যায় করেছিলো বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে চলা এই আন্দোলনের খবর ও ছবি করতে যাওয়া একটি সফল দৈনিক পত্রিকার চিত্র সাংবাদিকটি! কী কারণে আন্দোলনকারীরা তাঁর ক্যামেরাটি কেড়ে নিয়েছিলেন এবং বলতে পারেন কী কারণে ওই সাংবাদিকের গলায় থাকা সোনার হার ছিনতাই হয়? কি ভাবছেন এটাই আন্দোলন? আসলে ডাক্তাররা যদি একটু ডাক্তার সুলভ আচরণ করেন সাধারণের সঙ্গে তাহলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া খুব একটা কষ্টকর হবে বলে মনে হয় না। তারা যদি তাদের দাবি নিয়ে রাজ্যের রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে পারেন তাহলে তারা কেন বা কাদের নির্দেশে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বা আলোচনার মধ্য দিয়ে এই সমস্যা না মিটিয়ে এই ভাবে কর্মবিরতি পালন করছেন তা কিন্তু ভাবার বিষয়। (নিজস্ব চিত্র)

Exit mobile version