দ্বি-শত জন্মবার্ষিকীর প্রাক্কালে কতটা মূল্য পেলেন বিদ্যাসাগর?

Ishwarchandra_Vidyasagarস্বরূপম চক্রবর্তীঃ বিদ্যাসাগরের ভাবধারাকে দিকে দিকে ছড়িয়ে দিতে এবং এখনও সাধারনের কাছে আমাদের প্রথম অক্ষর জ্ঞানের পরিচায়ক পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সেইভাবে জনপ্রিয় নয়। এর জন্য দায়ী কী আমাদের সমাজ ব্যবস্থা? নাকি অজ্ঞাত কোন রাজনৈতিক অঙ্গুলি হেলনে এই মহাপুরুষ আজও অবহেলিত? আজ সারা দেশে সমগ্র বাঙালি সমাজের কাছে যাঁর অবস্থান হওয়া উচিত ছিল মনের মনি কোঠায়, তিনি কেন আজ বঞ্চিত, একথা কী আমরা কেউ কখনো ভেবেছি? নাকি শুধুই গতানুগতিকতার স্রোতে গা ভাসিয়ে ক্রমশঃ ভুলে গেছি বা ভুলতে বসেছি আমাদের বাঙালি সমাজের ঘৃণ্য কুসংস্কার দূর করতে এবং বঙ্গ শিক্ষার ক্ষেত্রে যাঁর অবদান অপরিসীম, তিনি কেন আজকের সমাজে আমাদের কাছে এইভাবে ব্রাত্য থেকে যাবেন, একথা আমাদের কী ভাবা উচিত নয়? যে লোকটির অবদান আমাদের শিক্ষায় অনন্য, সেই তাঁকেই কিনা আমরা ভুলতে বসেছি! আজ তাঁর জন্মের ২০০ বছরের প্রাক্কালে আমরা কী পাই? ভাবতে অবাক লাগে এই মহাপুরুষের জন্মদিনটা পর্যন্ত বাংলার কোনও বিদ্যালয় বা মহাবিদ্যালয়ে পালিত হয় না। সরকারী ভাবেও সেইভাবে কোনও উদ্যোগ রাজ্যের কোন সরকারকে নিতে দেখা যায় নি। শুধুমাত্র তাঁর নামে বিশ্ব-বিদ্যালয়, সেতু বা কয়েকটি রাস্তা নির্মাণ করেই কী আমরা তাঁকে প্রকৃত সন্মান দিতে পারলাম না পেরেছি?  কেন আজ তাঁকে আমরা আমাদের মনের মনিকোঠায় স্থান দেবো না। যে মানুষটি মূর্তি পুজোর আড়ম্বরের থেকেও সেই অর্থে গরীব সাধারণ মানুষের মুখে দু-বেলা দু-মুঠো অন্ন তুলে দিতে বদ্ধপরিকর ছিলেন, আজ কি কারণে আমরা তাঁকে ভুলে যাবো, কেউ কি এটা একবারও ভেবেছি? নারী শিক্ষা প্রসারে, বিধবা বিবাহ প্রচলনে যাঁর অবদান সারা বাংলা সঙ্গে সারা ভারত কোনওদিনই ভুলবে না বা ভোলা উচিত নয়। অথচ আজ সেই তাঁকেই আজ আমরা দূরে সরিয়ে রেখেছি কাদের অর্দৃশ্য অঙ্গুলি হেলনে। নারীশিক্ষার বিস্তারের পথিকৃৎ বিদ্যাসাগর মহাশয়  প্রথম উপলব্ধি করেছিলেন, নারিজাতির উন্নতি না ঘটলে বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতির প্রকৃত উন্নতি সম্ভব নয়। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর উদ্যোগী হয়ে ভারতের প্রথম ভারতীয় বালিকা বিদ্যালয় কলকাতায় হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এটি বর্তমানে বেথুন স্কুল নামে পরিচিত। আজ তাঁর জন্মের ২০০ বছরের প্রাক্কালে দাঁড়িয়ে আমরা কী আমাদের মনের মনিকোঠায় তাঁর মত সমাজ সংস্কারক, শিক্ষাদরদী, গরীব মানুষের জন্য নিবেদিত প্রাণ মহাপুরুষের জন্য কী একটুও ভাবতে পারি না? শিক্ষাকে জাত-ধর্মের মধ্যে আটকে না রেখে সকলের জন্য উন্মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছিলেন সেই মহান মানুষটি কী এইটুকু শ্রদ্ধা পেতে পারেন না আমাদের কাছ থেকে? লোক দেখানো বাহ্যিক আড়ম্বরে নয়, অন্তর থেকে তাঁকে অনুসরণ করা হোক, সুস্থ সমাজ গড়তে সকল সামাজিকতা, জাতপাতের ওপরে উঠে আমাদের সকলের উচিত এই মহাপুরুষকে স্মরণ করা ও তাঁকে পথিকৃত করে আগামীর জাতির ভবিষ্যত্‍ দের সঠিক পথে সঠিক দিশা দেখতে সাহায্য করা।(ছবি সৌজন্য গুগুল) 

bidyasagor-flex

 

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মের ২০০ বছরের প্রাক্কালে সংবাদ প্রতিখন আয়োজন করেছে এক অভিনব প্রতিযোগিতা। বিদ্যাসাগর মহাশয়কে সন্মান জানাতে রাজ্যের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলির মধ্যে আয়োজন করা এই প্রতিযোগিতায় সংবাদ প্রতিখন আবেদন রাখছে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছে, আসন্ন সরস্বতী পুজোয় তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাগদেবীর আরাধনার সঙ্গে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রবাদ প্রতীম মহাপুরুষ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে যথাযোগ্য সন্মান প্রদর্শন করবে, তাদের মধ্যে সেরা শিক্ষা প্রতিস্থাংগুলিকে পুরস্কৃত করব আমরা।  

competation

 

error: Content is protected !!

Discover more from Sambad Pratikhan

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading